নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জারচর, নিলক্ষা এবং সদর উপজেলার আলোকবালীতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ স্বাধীন বাহিনীর প্রধান স্বাধীনসহ বারো জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এ সময় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে র্যাবের গুলি বিনিময় হয়। মঙ্গলবার র্যাব-১১ নরসিংদী ক্যাম্পের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
এ সময় একটি রিভলবার, দুই রাউন্ড রিভলবারের গুলি, একটি যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি শট গান, ২৯ রাউন্ড শট গানের গুলি, একটি ওয়ান শুটার গান, ছয়টি রামদা, একটি ছোরা, একটি তলোয়ার, একটি কিরিচ, দুটি সামুরাই, একটি চাপাতি, তিনটি বুলেট প্রুফ জ্যাকেট, নগদ আট হাজার ৮৮০ টাকা এবং আটটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো– স্বাধীন বাহিনীর প্রধান আব্দুস সাত্তার ওরফে স্বাধীন, কালন মিয়া, নাজির হোসেন, বিল্লাল হোসেন, জুয়েল, আবুল হোসেন, আনিছ, খোকন মিয়া, মিজানুর রহমান, আইয়ুব আলী, নাসির ও লিটন। তাদের সবার বাড়ি রায়পুরা উপজেলার মির্জারচরে।
র্যাব জানায়, অভিযানের সংবাদ পেয়ে নিলক্ষা ও আলোকবালীর চরাঞ্চলে সন্ত্রাসীরা আত্মগোপন করে। অন্যদিকে মির্জারচর এলাকায় অভিযান পরিচালনার সময় কুখ্যাত স্বাধীন বাহিনীর প্রধান স্বাধীনসহ দলের অন্য সদস্যরা র্যাবকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করে। র্যাবও আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি করে। প্রচণ্ড গোলাগুলির এক পর্যায়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হত্যা মামলার আসামিসহ পলাতক কুখ্যাত সন্ত্রাসী স্বাধীনসহ অন্যদের আটক করতে সক্ষম হন র্যাব সদস্যরা। গোলাগুলির সময় সন্ত্রাসীরা প্রায় ৩০ রাউন্ড গুলি করে। র্যাবও ১২ রাউন্ড গুলি করে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা বলেন, ‘স্বাধীন বাহিনীর সদস্যরা চাঁদাবাজি, ডাকাতি, অগ্নিসংযোগ, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হত্যাসহ ব্যাপক সহিংসতা করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তাদের অপকর্মের ধারাবাহিকতায় রায়পুরা থানার মির্জারচর এলাকায় অপরাধ সংঘটনের জন্য সমবেত হয়।’
প্রাথমিক অনুসন্ধানে র্যাব জানায়, গ্রেফতার আসামিরা মির্জারচর এলাকায় চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ধরা-ছোঁয়ার বাইরে ছিল। তাদের বিরুদ্ধে রায়পুরা থানাসহ অন্যান্য থানায় খুন, হত্যাচেষ্টা, মাদক মামলাসহ একাধিক অস্ত্র মামলা রয়েছে। তারা বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্র প্রদর্শন করে আধিপত্য বিস্তার করতো। ইতোমধ্যে ইউপি নির্বাচন নিয়ে সহিংসতায় চরাঞ্চলে ছয় জন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে। তাই নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য র্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে।