ভোমরা সীমান্ত দিয়ে আসা ভূসি নিয়ে গাজীপুরের মাওনা যাচ্ছেন ট্রাকচালক মো. খোকন মিয়া। দৌলতদিয়া ঘাট পার হতে তার ভোগান্তির যেন শেষ নেই। ফেরি পারাপারের ভোগান্তি নিয়ে তিনি বলেন, ‘ড্রাইভারদের কোনও জীবন আছে নাকি? নাওয়া নাই, খাওয়া নাই, গোসল নাই। সারাদিন রাস্তায় পড়ে থাকতে হয়। তারপর আবার ফেরির জন্য অপেক্ষা, এ ভোগান্তির শেষ কই। সকাল থেকে খাই নাই, কখন যে পার হমু তাই ভাবতাছি।’
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শুক্রবার (১৮ মার্চ) দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ফেরি পার হতে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সিরিয়াল তৈরি হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঘাটে অপেক্ষা করে দেখা যায় ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বাংলাদেশ হ্যাচারি পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কয়েকশ পণ্যবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সারি আরও দীর্ঘ হতে থাকে। তবে অপেক্ষমাণ এসব যানবাহনের মধ্যে যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা কম।
পদ্মার পানি কমে যাওয়ায় ফেরিঘাটের পন্টুন নিচু হয়ে গেছে। ফলে ফেরিতে গাড়ি লোড-আনলোডে দ্বিগুণ সময় লাগায় এমনটা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
খুলনা থেকে কুরিয়ারের মাল বোঝাই করে ঢাকার হাজারীবাগ যাচ্ছেন মো. শামিম। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে গোয়ালন্দ মোড়ে এসে আটকা পড়ি। সকালে দৌলতদিয়া ঘাটে এসেও ট্রাকের সিরিয়ালে রয়েছি। টয়লেটের সমস্যা, খাওয়ার সমস্যা নিয়ে জীবন শেষ। জানি না কতদিন নদী পার হতে এ ভোগান্তি পোহাতে হবে। একটা ব্রিজ হলে ভালো হতো।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, নদীতে পানি কমে গিয়ে পন্টুন নিচু হয়ে গেছে। ফলে প্রতিটি ফেরি লোড-আনলোডে সময় বেশি লাগছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দৌলতদিয়া দিয়ে চার হাজার বিভিন্ন যানবাহন পারাপার হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে। বর্তমানে এ রুটে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৯টি ফেরি যানবাহন পারাপারে কাজ করছে।