ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত বাসে যাত্রীদের বেঁধে মালামাল লুট ও এক নারীকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার রাজা মিয়ার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বিকালে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক বাদল কুমার চন্দ্র রায় রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মুরাদ হোসেন আসামির সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে তোলেন। এই রাজা মিয়াকে মূলহোতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ।
টাঙ্গাইল আদালতের পরিদর্শক তানভীর আহমেদ জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে, দুপুরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভুক্তভোগী নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। এ বিষয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের গাইনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেহেনা পারভীন বলেন, ‘তিন সদস্যের মেডিক্যাল টিম পরীক্ষা করেছে। কিছু সাইন পজিটিভ আছে। সাইন অব স্ট্রাগল রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তিনি। নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে, ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে তাকে জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে আদালতের বিচারক তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
জানা গেছে, ঈগল এক্সপ্রেসের বাসটি বুধবার (৩ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে ছাড়ে কুষ্টিয়া থেকে। গন্তব্য ছিল নারায়ণগঞ্জ। রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌঁছে সিরাজগঞ্জের জনতা হোটেলে। মহাসড়কের পাশের এই হোটেলে যাত্রীরা খাওয়া-দাওয়া করেন। যাত্রাবিরতি শেষে রাত ১২টার দিকে গন্তব্যের দিকে রওনা দেয় বাসটি। এরপরই সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যেই তিন ধাপে ১৩ জন বাসটিতে ওঠে। তখনও বাসে থাকা যাত্রীরা আঁচ পারেননি আগামী কয়েকঘণ্টায় কী ঘটতে যাচ্ছে।
এরপরই শুরু হয় তিন ধাপে বাসে ওঠা ১৩ ডাকাতদের তাণ্ডব। প্রথমে চালকের গলায় চুরি ঠেকিয়ে বেঁধে ফেলে চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারকে। এরপর যাত্রীদের বেঁধে বাসটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে লুট করে মালামাল। লুটপাট শেষে এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে। বাসটিতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়ে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়ায় একটি বালুর স্তূপে বাসটি উল্টে দিয়ে ডাকাত দল পালিয়ে যায়।