উদ্বোধনের পরদিন ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বিআরটিসি বাস বন্ধ করে দিয়েছে জেলা বাস মালিক সমিতি। এ নিয়ে উপজেলাবাসীর মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বিআরটিসি বাস চলাচল করতে দেওয়া না হলে উপজেলায় বাস মালিক সমিতির কোনও বাস ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিআরটিসি বাস চলাচলের দাবি ওঠে। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ ফরিদপুরের নগরকান্দা থেকে বাস চালু করে। পরে স্থানীয়দের দাবির মুখে মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) বোয়ালমারী থেকে বিআরটিসি বাস চালু করে কর্তৃপক্ষ। উদ্বোধনের পরদিন আজ সকাল ৭টায় বোয়ালমারী বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় বিআরটিসির একটি বাস। পথিমধ্যে ভাঙ্গা বাস টার্মিনালের কাছে বাসটি আটকে দেয় বাস মালিক সমিতির লোকজন। বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় যাত্রীদের। ফলে চরম বিপাকে পড়েন যাত্রীরা।
বাসের একাধিক যাত্রী জানান, ভাঙ্গা বাস টার্মিনালে আসার পর বেশ কয়েক ব্যক্তি বাসচালকের কাছ থেকে চাবি ছিনিয়ে নেয়। তারা বাসের চালক ও হেলপারকে গালাগালি করে। বাসের যাত্রীদের সঙ্গেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। বিআরটিসি বাস বন্ধ করে দেওয়ার খবর বোয়ালমারীতে পৌঁছালে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভে সৃষ্টি হয়। বোয়ালমারীর সব শ্রেণি-পেশার মানুষ বাস বন্ধের তীব্র নিন্দা জানান এবং দ্রুতই বাস চলাচলের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান প্রশাসনের কাছে। একই সঙ্গে তারা ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
বোয়ালমারীর কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করা হলে ফরিদপুর জেলা বাস মালিক সমিতির কোনও গাড়ি বোয়ালমারীর ওপর দিয়ে চলাচল করতে দেওয়া হবে না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) কুমিল্লা ডিপোর ম্যানেজার (অপারেশন) মো. কামরুজ্জামান জানান, বিআরটিসির বাস বন্ধ করার কোনও এখতিয়ার জেলা বাস মালিক গ্রুপের নেয়।
পরিবহন সেবা মানুষের দোঁড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর। সেই হিসেবে বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করা ঠিক হয়নি।
ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান বলেন, ‘বিআরটিসি সারাদেশের ২৩ রুটে যে রুট পারমিট দিয়েছে সেখানে কোনও উপজেলার অনুমতি নেই। তাছাড়া জেলা বাস মালিক গ্রুপ থেকেও অনুমতি নেয়নি। ফলে আমরা বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, ‘বাস চলাচলের বিষয়ে একটি ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। আশা করছি এ সমস্যাটির সমাধান হয়ে যাবে।বিআরটিসির পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’