পোশাক কারখানার ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, মাসিক চাঁদা না দেওয়ায় ভয়ভীতি প্রদর্শন ও শিপমেন্টের কাভার্ডভ্যান আটক করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে গাজীপুর জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাউসার আহম্মেদ মোল্লার বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় তিনিসহ তার সাত সহযোগীর নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫/২০ জনকে আসামি করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলার জয়দেবপুর থানাধীন শিরিরচালা (পশ্চিমপাড়া) এলাকার কনফিডেন্স ট্যাক্স ওয়্যার লিমিটেড (পোশাক) কারখানার মানবসম্পদ (এইচআর) বিভাগের কর্মকর্তা মিনহাজ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- শিরিরচালা (পশ্চিমপাড়া) এলাকার আলাউদ্দিন মোল্লার ছেলে গাজীপুর জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাউসার আহম্মেদ মোল্লা (৪৫), আব্দুল করিমের ছেলে সুমন মিয়া (৩২), মামুন মিয়া (৩০), মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে আবু সাইদ (৪৫), মৃত আব্দুল মান্নান মোল্লার ছেলে আশরাফুল (৪০), মৃত মজিবর রহমানের ছেলে দুলাল মিয়া (৪২) ও বানিয়ারচালা (জলপাইতলা) এলাকার মৃত শামছুল হকের ছেলে জাহিদ হাসান রুবেল (৩২)।
মামলার বাদী মিনহাজ উদ্দিন এজাহারে উল্লেখ করেন, আসামিরা কোম্পানির ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আমাদের কাছে মাসিক চাঁদা দাবি করে আসছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ আসামিদের দাবি করা চাঁদার টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাদের সংঘবদ্ধ চক্র কারখানার ক্ষতি সাধনসহ কর্মরত স্টাফদেরকে খুন, জখমের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে। এক পর্যায়ে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় কারখানা থেকে একটি শিপমেন্টের কাভার্ডভ্যান (নং-চট্ট মেট্রো-১১-০০৩৯) প্রায় ৫০ লাখ টাকা মূল্যের গার্মেন্টস পণ্য নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে বের হয়। কাভার্ডভ্যানটি কারখানার প্রধান ফটকের সামনে পৌঁছালে যুবদল নেতা কাউসার আহম্মেদ মোল্লার মালিকানাধীন প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-১৪-৫২০৬) উল্লেখিত আসামিসহ তাদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জন কাভার্ডভ্যানের পথরোধ করেন।
এ সময় তারা কাভার্ডভ্যানের চালক সাজুর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকার জন্য চালককে মারধর করে দ্রুত টাকা আনতে বলে। চালক ভয়ে তাদেরকে পাঁচ হাজার টাকা দেয়। এ সময় তারা শিপমেন্টের কাভার্ডভ্যান চার ঘণ্টা আটকে রাখেন। চালকের চিৎকার শুনে বাদীসহ অন্য লোকজন এগিয়ে গেলে আসামিরা প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, এলাকায় গার্মেন্টস ব্যবসা করতে হলে তাদের দাবি করা চাঁদার টাকা পরিশোধ করে ব্যবসা করতে হবে।
অভিযুক্ত গাজীপুর জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাউসার আহম্মেদ মোল্লা দাবি করেন, কারখানাটি আমার বাড়ির পাশে। কাভার্ডভ্যান যাওয়ার সময় আমার বাড়ির কাঁঠাল গাছের একটি বড় ডাল ভেঙে ফেলে। পরে আমার বাবা ফোনে আমাকে বিষয়টি জানালে কারখানা কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলি। আমি বাড়িতে এলে দেখি, কাভার্ডভ্যান রাস্তায় আটকে আছে। আমার প্রাইভেটকার নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করতে না পেরে রাস্তায় গাড়ি রেখে বাসায় চলে যাই। পরে কারখানার পরিচালককে ফোন দিলে তিনি লোকজন নিয়ে গাছের ডাল কাটার অনুমতি দিলে লোকজন নিয়ে ডাল কেটে রাস্তা ক্লিয়ার হওয়ার পর কাভার্ডভ্যান চলে যায় এবং আমি আমার প্রাইভেটকার বাসায় নিয়ে আসি। চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।