X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

অসহায় বৃদ্ধ ভ্যানচালকের পাশে শৈলকুপার ইউএনও

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
১৮ জুলাই ২০১৮, ১৪:৫৮আপডেট : ১৮ জুলাই ২০১৮, ১৪:৫৮

বৃদ্ধ ভ্যানচালকের পাশে শৈলকুপার ইউএনও বৃদ্ধা স্ত্রী, প্রতিবন্ধী ছেলে ও বিধবা মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাতে ৭৫ বছর বয়সেও ভ্যান চালান ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার চণ্ডিপুর গ্রামের আদিল উদ্দিন। বৃদ্ধ হওয়ায় ধীরে ধীরে চালানোর কারণে তার ভ্যানে উঠতে চান না যাত্রীরা। বিষয়টি চোখে পড়ে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উসমান গনির। পরে অসহায় এই বৃদ্ধর পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। আদিল উদ্দিনের সংসার চালাতে ২ মাসের খরচ নিজের পকেট থেকে দেন তিনি। এছাড়া তিনি প্রতিবন্ধী ছেলেকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ারও ব্যবস্থা নেন।

জানা যায়, রবিবার (১৫ জুলাই) সকালে শৈলকুপা থেকে ঝিনাইদহ শহরে আসার পথে গাড়াগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে বৃদ্ধ আদিল উদ্দিনকে ভ্যান চালাতে দেখেন ইউএনও উসমান গনি। বয়সের ভারে কুঁজো হয়েও ভ্যান চালাচ্ছিলেন তিনি। বিষয়টি চোখে পড়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার। দুপুরে অফিসে ফিরে আদিল উদ্দিনের ঠিকানা সন্ধান করে সোমবার তার অফিসে ডাকেন ইউএনও। পরে ২ মাস সংসার চালানো খরচ দেন ও তার প্রতিবন্ধী ছেলেকে একটি কার্ড করে দেওয়ার ব্যবস্থা নেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উসমান গনি বলেন, ‘গাড়াগঞ্জ স্ট্যান্ডে বয়সের ভারে কুঁজো হয়ে যাওয়া একজন ব্যক্তি খুব যাত্রী নিয়ে ধীরে ধীরে ভ্যান চালিয়ে যাওয়ার দৃশ্যটি দেখে কষ্ট লাগলো। জানা গেল লোকটি এই এলাকায় ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। আমি ওই ব্যক্তির ঠিকানা যোগাড় করতে বলি। পরে জানতে পারি, লোকটির নাম আদিল উদ্দিন। তার বাড়ি শৈলকুপা উপজেলার দুধসর ইউনিয়নের চণ্ডিপুর গ্রামে। পরে তাকে দেখা করার জন্য তাকে সংবাদ দেওয়া হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘সোমবার সকালে ভ্যান চালিয়ে আদিল উদ্দিন আমার অফিসে আসেন। আলাপকালে তার পরিবারের বিস্তারিত তথ্য জানা যায়। লোকটির এক ছেলে প্রতিবন্ধী। অন্য ছেলে ঢাকায় থেকে পড়াশুনা করে, কিন্তু বাবার খোঁজ রাখে না। তিন মেয়ে বিবাহিত। এক মেয়ে বিধবা হয়ে বাবার কাছে থাকে। অর্থাৎ সংসারে বৃদ্ধা স্ত্রী, প্রতিবন্ধী ছেলে, বিধবা মেয়ে ও তিনি নিজে। সংসারে একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তিও তিনি নিজে। বয়সের কারণে সোজা হয়ে হাঁটতে পারেন না। কিন্তু জীবন বাঁচানোর তাগিদে প্রতিদিন ভ্যান নিয়ে বাইরে যেতে হয় তার। দ্রুত ভ্যান চালাতে পারে না বলে তার ভ্যানে কেউ উঠতে চায় না। দিনে ৪০/৫০ টাকা আয় হয়। তাই দিয়ে কোনওরকম সংসার চলে। কোনও কোনও দিন না খেয়েও থাকতে হয়। তবে তিনি ভিক্ষা করেন না। আত্মমর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকতে চান। এই বয়সে সংসারে বিশ্রামে থাকার কথা, নাতি-নাতনি নিয়ে আনন্দে থাকার কথা। কিন্তু তার ভাগ্যটা অন্যরকম! আগামী ২ মাস সংসার চালানোর মতো নগদ টাকা তাকে নিজ থেকে দিয়েছি। তার প্রতিবন্ধী ছেলেকে একটি প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়া হচ্ছে। বৃদ্ধ লোকটিকে কিভাবে স্থায়ীভাবে আয়ের ব্যবস্থা করা যায় এটাই এখন ভাবছি।’

/এআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা