X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

হলুদ ফুলের হাসিতে লাভের আশা শার্শার কৃষকদের

বেনাপোল প্রতিনিধি
১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:২০আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:৩৫

 

শার্শার মাঠে হলুদ ফুলের হাসি হেমন্তের শেষ দিকে উত্তরের হাওয়ায় শীতের আগমনী বার্তা। এরই মধ্যে মাঠে মাঠে শোভা বাড়াচ্ছে সরিষা ফুল। গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠে ঝিলিক দিচ্ছে সোনালী হাসি। সরিষা ফুলে ঘুরে ঘুরে মধু সংগ্রহ করছে মৌমাছির দল। এমন মন ভালো করা দৃশ্য আকৃষ্ট করে সবাইকে।

যশোরের শার্শা উপজেলার মাঠে এখন এমনই দৃশ্য শোভা বাড়চ্ছে। বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। যেন সরিষার হলুদ হাসিতে স্বপ্ন দেখছে কৃষক।

দেশের অন্যতম একটি তৈল জাতীয় খাদ্যের নাম সরিষা। চলতি মৌসুমে শার্শায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। বেড়ে ওঠা গাছ আর ফুল দেখে অধিক ফলনের স্বপ্ন দেখছেন এ উপজেলার কৃষকরা। সরিষার মাঠে দেখা মিলে মৌমাছির মধু আহরণের দৃশ্য। গত বছর স্থানীয় বাজারে উন্নত জাতের সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা এবারও সরিষা চাষে অধিক আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গেল বছরের তুলনায় এ বছর সরিষা চাষে অধিক লাভের মুখ দেখেবেন বলে মনে করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, শার্শা উপজেলা সরিষা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। চলতি মৌসুমে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ১৫শ’ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গতবারের চেয়ে দুইশ’ হেক্টর বেশি। গত মৌসুমে ১২শ’ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়। কৃষকরা তাদের অধিকাংশ জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) বারি-১৪, বারি-৯, বিনা-৯/১০, সরিষা-১৫, সোনালি সরিষা (এসএস-৭৫) ও স্থানীয় টরে-৭ আবাদ করেছেন।

জানা যায়, বছরের পর বছর স্থানীয় জাত চাষ করে ফলন কম হওয়া ও উৎপাদনে সময় বেশি লাগার কারণে কৃষকরা সরিষা চাষ অনেকাংশে কমিয়ে দেন। তবে চলতি মৌসুমের শুরুতে উপজেলা কৃষি বিভাগ ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট’ উদ্ভাবিত অধিক ফলনশীল বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে। এ জাতের সরিষা মাত্র ৭৫-৮০ দিনে ঘরে তোলা যায়। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় প্রায় দেড় হাজার কেজি। সরিষা কেটে ওই জমিতে আবার বোরো আবাদ করা যায়। এতে কৃষি জমির সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়।

উপজেলার বারোপোতা গ্রামের সরিষা চাষি মফিজুর রহমান জানান, এ বছর ২ বিঘা জমিতে বারি-১৪ ও বিনা-৯/১০ জাতের সরিষার আবাদ করেছি। বিঘা প্রতি প্রায় ৩-৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সরিষার গাছ ভালো হয়েছে। আশা করছি বাম্পার ফলন হবে।

একই গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান জানান, গত বছর বাজারে সরিষার দাম ভাল পাওয়ায় এবারও সরিষা চাষ করেছি। ফলন ভালো ও দাম পেলে আগামী বছর আরও অনেকেই সরিষা চাষে আগ্রহী হবেন।

শার্শার মাঠে হলুদ ফুলের হাসি উপজেলার ঘিবা গ্রামের কৃষক সাহেব আলী জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শে ২ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের সরিষার আবাদ করেছি। সরিষার জমিতে ধানের আবাদও ভালো হয় এবং বোরো চাষে খরচ কম হয়।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল জানান, কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। বারি-১৪ সহ অন্যান্য সরিষা বপনের মাত্র ৭৫-৮০ দিনের মধ্যে এর ফলন পাওয়া যায়। এ সরিষা উত্তোলন করে ফের বোরো আবাদ করতে পারেন বলে এটাকে কৃষকরা ‘লাভের ফসল’ হিসেবে অভিহিত করে থাকেন।

তিনি আরও বলেন, বারি-১৪ সরিষার গাছ লম্বা হওয়ায় এর পাতা মাটিতে ঝরে পড়ে জৈব সারের কাজ করায় জমির উর্বরতা শক্তি বাড়ে। এ জাতের সরিষা আবাদের পর ওই জমিতে বোরো আবাদে সারের পরিমাণ কম লাগে। তাই এ জাতের সরিষা চাষের জন্য আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে উদ্বুদ্ধ করি এবং বিভিন্ন উপকরণ সহায়তা প্রদান করি। এ বছর উপজেলায় ৯শ’ জন কৃষককে উপকরণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে সরিষার ভালো ফলনের আশা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

 

/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘যুক্তরাষ্ট্রে ৯০০ শিক্ষার্থী গ্রেফতারের ঘটনা বিএনপির অত্যাচারের কথা মনে করিয়ে দেয়’
‘যুক্তরাষ্ট্রে ৯০০ শিক্ষার্থী গ্রেফতারের ঘটনা বিএনপির অত্যাচারের কথা মনে করিয়ে দেয়’
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আপিল বিভাগের নতুন ৩ বিচারপতির শ্রদ্ধা
বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আপিল বিভাগের নতুন ৩ বিচারপতির শ্রদ্ধা
বেসিস নির্বাচন: তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠনে নারীর অংশগ্রহণ
বেসিস নির্বাচন: তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠনে নারীর অংশগ্রহণ
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দার আটক
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ