X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে বাধার জেরেই খুলনায় ৩ খুন

খুলনা প্রতিনিধি
১১ জানুয়ারি ২০২২, ০৯:৪৫আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২২, ০৯:৫৪

প্রায় আড়াই মাস পর খুলনার কয়রায় আলোচিত তিন খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। প্রতিবেশী নারীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে বাধা দেওয়ার জেরে পরিকল্পিতভাবে প্রথমে স্ত্রী, মেয়েকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণের পর স্বামীসহ তিন জনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পরে লাশ গুমের জন্য পাশের পুকুরে ফেলে দেয় খুনিরা।

খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান সোমবার (১০ জানুয়ারি) তার সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, চাঞ্চল্যকর এ মামলার অন্যতম আসামি আবদুর রশিদ গাজী ও জিয়াউর রহমানসহ মোট ১৪ জনকে এ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার পর রশিদ গাজী পলাতক ছিলেন। তাকে ৮ জানুয়ারি যশোর থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আরও ছয় জনকে পৃথক স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে রশিদ গাজী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রশিদ গাজী জানান, একই গ্রামের মো. জিয়াউর রহমান ও রাজিয়া সুলতানার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে হাবিবুল্লাহ বাধা হয়ে দাঁড়ান। সুলতানার স্বামী কুদ্দুস গাজী খুলনা শহরে কাঁচামালের ব্যবসার সুবাদে বাড়িতে কম যাতায়াত করেন। এ সুযোগে জিয়ার সঙ্গে সুলতানার সম্পর্ক হয়। সুলতানা হাবিবুল্লার প্রতিবেশী হওয়ায় তার চোখে বিষয়টি ধরা পড়ে। এ কারণে তিনি তাদের সম্পর্কের মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়ান। ঘটনার বছর খানেক আগে জিয়াকে হাতেনাতে ধরে ফেলার পর সুলতানা ক্ষিপ্ত হয়ে হাবিবুল্লাকে বটি দিয়ে কোপ দেন। পরে এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে জিয়া হাবিবুল্লার ওপর আরও ক্ষিপ্ত হন। বিভিন্ন সময় সে হাবিবুল্লাকে শায়েস্তা করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা করতে থাকেন। পরে জিয়া ও রশিদের নেতৃত্বে গত ২৫ অক্টোবর রাত ১২টার দিকে দুর্বৃত্তরা ওই বাড়িতে গিয়ে প্রথমে হাবিবুল্লাহ, তার স্ত্রী ও মেয়ের হাত-পা বাঁধে। এরপর মা-মেয়েকে ধর্ষণের পর তিন জনকে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দেয়। হত্যাকাণ্ডে কমপক্ষে ছয়জন সরাসরি অংশ নেয়।

পুলিশ সুপার বলেন, বিকৃত যৌন লালসা, প্রতারণামূলক আর্থিক লেনদেন ও বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের ঘটনায় দলবদ্ধভাবে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়। গ্রেফতারদের মধ্যে ছয় জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন মো. জিয়াউর রহমান জিয়া, রাজিয়া সুলতানা, শামসুর রহমান, মো. সাইফুল ইসলাম বাবলু, আল আমিন হোসেন, আসলাম সরদার, আবদুল ওহাব ওরফে হক, তাসলিমা, শামীমুল ইসলাম অঞ্জন, আব্দুর রশিদ গাজী ও মোস্তফা কামাল।

উল্লেখ্য, গত ২৬ অক্টোবর বামিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিবুল্লাহ, তার স্ত্রী বিউটি বেগম ও মেয়ে হাবিবা সুলতানা টুনির লাশ বাড়ির পাশের পুকুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন সন্ধ্যায় নিহত হাবিবুল্লার মা কোহিনুর খানম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে কয়রা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি প্রথমে কয়রা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসাদুল ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি উজ্জ্বল কুমার দত্ত আলোচিত মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান। পাশাপাশি জেলা পুলিশের ট্রেনিং অ্যান্ড আইটি শাখার ইনচার্জ এজাজ শফি মামলাটির ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখেন। 

 

/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
এমপি দোলনের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ, সাংবাদিক আহত
এমপি দোলনের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ, সাংবাদিক আহত
চরের জমি নিয়ে সংঘর্ষে যুবলীগ কর্মী নিহত, একজনের কব্জি বিচ্ছিন্ন
চরের জমি নিয়ে সংঘর্ষে যুবলীগ কর্মী নিহত, একজনের কব্জি বিচ্ছিন্ন
দাবদাহে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের তরল খাদ্য দিচ্ছে ডিএমপি
দাবদাহে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের তরল খাদ্য দিচ্ছে ডিএমপি
জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
কান উৎসব ২০২৪জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া