প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাস্থল যশোর শহরের শামস-উল হুদা স্টেডিয়াম কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সকাল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জনসভাস্থলে আসছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে উৎসবের শহরে পরিণত হয়েছে যশোর।
যশোর জেলার আট উপজেলাসহ আশপাশের জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা এসেছেন। অনেকে এখনও আসছেন। সকাল থেকেই জনসভাস্থল অভিমুখে মানুষের ঢল দেখা নামে। প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সাদা গেঞ্জি ও লাল-সবুজ টুপি পরে পুরুষ কর্মী-সমর্থকরা এবং লাল পাড়ের সবুজ শাড়ি পরে নারী কর্মী-সমর্থকরা এসব মিছিলে আছেন। সকাল থেকে যশোর শহরের বিভিন্ন সড়কে এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
যশোর শহরের রতন করবার বিবি রোড এবং অন্যান্য এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে জনতা সমাবেশস্থলের দিকে রওনা দিচ্ছেন। জনসভার বাইরে রাস্তাতেও লোকসমাগম বেশি। মিছিল নিয়ে আব্দুর রাজ্জাক কলেজের গেট দিয়ে প্রবেশের পর স্টেডিয়ামের অংশে এগোচ্ছেন নেতাকর্মীরা। তারা দলে দলে জনসভার মাঠে ঢুকছেন। নেতাকর্মীদের স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে এলাকা।
যশোরের গদখালি থেকে আসা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমার এলাকা থেকে ৫ হাজার লোকের একটি দল মিছিল নিয়ে চাচড়া থেকে হেঁটে জনসভায় এসেছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেখতে বারো বাজার থেকে এসেছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আলী আহমদ খান। তিনি বলেন, ‘আমি প্যারালাইজড, তারপরও প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার জনসমাবেশে এসেছি।’
সকাল ১০টায় হেলিকপ্টারে যশোর মতিউর রহমান বিমানঘাঁটিতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এরপর যশোরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী (বিএএফ) একাডেমিতে বক্তব্য দেন। দুপুর ২টার দিকে যশোর জেলা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি। যশোর জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ জানান, এই জনসভায় ১০ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটানোর লক্ষ্য রয়েছে।
নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে এসে উকিল বারের পাশের ঈদগাহ ময়দানে অবস্থান নিচ্ছেন। একটু পর পর তারা জনসভাস্থলে ঢুকছেন।
কেশবপুর থেকে চার হাজার লোকের মিছিলের সাথে আসা শেখ শাহিন বলেন, ‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে দেখতে জনসভায় এসেছি।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ বছর পর জননেত্রী শেখ হাসিনা যশোরে জনসভায় আসছেন। এই জনসভা সফল করতে আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। সভাস্থলে প্রবেশের জন্য আট থেকে ১০টি প্রবেশদ্বার খোলা হয়েছে। সভায় আগতদের জন্য পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও পানির ব্যবস্থা রয়েছে।’
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন ও জনসমাবেশ ঘিরে নিশ্চিত নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে প্রশাসন। জনসভাস্থলে পাঁচ স্তর এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।
জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পুলিশ সুপার ফিরোজ কবীর বলেন, ‘জনসভাস্থলে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করা হয়েছে। গোটা যশোর জেলার ৮ উপজেলা গোয়েন্দা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছে। বিভিন্ন স্তরে চৌকস অফিসার ও ফোর্স দায়িত্ব পালন করছেন।’