একটি ফোনালাপ ফাঁসের পর কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাঈফ আহমেদ নাসিমকে বদলি করে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সংযুক্ত করে ইসি। আদালতের রায়ে মিরপুর পৌরসভায় নির্বাচিত মেয়রের গেজেট প্রকাশ আটকাতে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার নীলনকশার অডিও রেকর্ড ফাঁস হওয়ার পর তাকে বদলি করা হয়।
গত ২২ মে নির্বাচন কমিশনের সহকারী সচিব মোহাম্মদ শহীদুর রহমানের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে মিরপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাঈফ আহমেদ নাসিমকে বদলি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাঈফ আহমেদ নাসিমকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে বদলি করা হয়েছে। মো. সাঈদ আহমেদ নাসিমকে আজকের (২২ মে) মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হতে বলা হয়েছে। অন্যথায়, আগামী ২৪ মে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত মর্মে গণ্য হবেন।
প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করা মো. আরিফুর রহমানকে মেয়র ঘোষণার পাশাপাশি আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে গেজেট প্রকাশের জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নির্দেশ দেন আদালত। নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলা করার দীর্ঘ চার বছর এক মাস পর এই রায় দেওয়া হয়।
গত ২৭ এপ্রিল আরিফুর রহমানকে মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন কুষ্টিয়ার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-৪-এর যুগ্ম দায়রা জজ মো. আলমগীর হোসাইন। আদালতের রায়ে বলা হয়, স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচন বিধিমালা ২০১০-এর ৫৯ (খ) বিধি অনুযায়ী আরিফুর রহমানের পক্ষে রায় দেওয়া হয়েছে।
রায়ে আরও বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. এনামুল হককে মেয়র নির্বাচিত ঘোষণা বাতিল করা হলো। ওই নির্বাচনে মোবাইল প্রতীকের প্রার্থী আরিফুর রহমানকেই যথাযথভাবে মেয়র নির্বাচিত ঘোষণা করা হলো। একইসঙ্গে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে আরিফুর রহমানকে মিরপুর পৌরসভার মেয়র হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হলো।
গত ৪ মে আদালতের রায়ের কপি আরিফুর রহমান ইসিতে জমা দেন। এরপর মিরপুর পৌরসভায় নির্বাচিত মেয়রের গেজেট প্রকাশ আটকাতে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাঈফ আহমেদ নাসিম নীলনকশা আঁটেন। তিনি পূর্বের আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র এনামুল হককে ভেবে ফোন করেন আদালতের রায়ে নির্বাচিত মেয়র আরিফুর রহমানকে। এরপর এনামুল হক ভেবে আরিফুর রহমানের কাছে নির্বাচন নিয়ে গেজেট আটকানোর নীলনকশা প্রকাশ করেন।