যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুরে বন্যা পারস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সেইসঙ্গে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৮০ হাজারের বেশি মানুষ। তলিয়ে গেছে প্রায় তিন হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ফসল।
মঙ্গলবার (২১ জুন) রাত ৮টা পর্যন্ত বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এরই মধ্যে জেলার সাত উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্রতিদিন পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ পর্যন্ত পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৮০ হাজারের বেশি মানুষ। খাবার ও নিরাপদ পানির সংকট থাকায় বন্যাদুর্গত মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। অধিকাংশ মানুষের ঘরে পানি প্রবেশ করায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। যেন তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। এখনও ত্রাণ সহায়তা পাননি বন্যাদুর্গত এলাকার বাসিন্দারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক জাকিয়া সুলতানা বলেন, বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় আমন বীজতলা, আউশ ধান, পাট, সবজি, মরিচ, তিল ও ভুট্টা পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে বকশীগঞ্জ উপজেলায় ৮৩৬ হেক্টর, মাদারগঞ্জ উপজেলায় ৫৮৮ হেক্টর, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ৯২২ হেক্টর, ইসলামপুর উপজেলায় ৩৬০ হেক্টর, মেলান্দহ উপজেলায় ১৪৬ হেক্টর, সরিষাবাড়ী উপজেলায় ৫৪৪ হেক্টর এবং সদর উপজেলায় ৬৯ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ১১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে ৬৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। বাকিগুলোতে এখনও কোনও রকমে কার্যক্রম চলছে।
জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষজনকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে ৮০টি মেডিক্যাল টিমকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বন্যার্ত এলাকার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর চারপাশে পানি উঠলেও ভেতরে প্রবেশ করেনি। ফলে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা চলামান আছে।