বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এক জায়গায় জড়ো করতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রতিদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের এক জায়গায় জড়ো করতে কাজ করছে। তারপরও রোহিঙ্গারা দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
জানা যায়, রেহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কুতুপালং ও বালুখালী ছাড়া ত্রাণ বিতরণের অনুমতি দিচ্ছে না প্রশাসন। একইভাবে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার লোকজনও ছড়িয়ে পড়া রোহিঙ্গাদের এক জায়গায় জড়ো করতে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতার পর প্রাণ বাঁচতে বাংলাদেশে প্রবেশ করা রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে পড়ছে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার গ্রামগঞ্জে। ইতিমধ্যে তারা উখিয়া, টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়িতে নতুন করে ৭টি বস্তি গড়ে তুলেছে। উখিয়া ও টেকনাফের প্রধান সড়কের উভয় পাশেও রয়েছে রোহিঙ্গাদের ঢল।
গতকাল শুক্রবার রাতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং ‘ইউএনএইচসিআর’ এর যৌথ উদ্যোগে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ‘আইওএম’ এর মুখপাত্র লোম ক্রিস জানিয়েছেন, সরকার নির্ধারিত ২ হাজার একর জমিতে আইওএম এর সহযোগিতায় আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১৬ হাজার পরিবারের ৭২ হাজার মানুষকে শেড নির্মাণের উপকরণ দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল বলেন, ‘বলতে গেলে রোহিঙ্গাদের এক জায়গায় জড়ো করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনুপ্রবেশকারি রোহিঙ্গাদের সরকারের নির্ধারিত জায়গায় জড়ো করতে দিনরাত কাজ করছে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ কারণে রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়া রোধ ও শৃঙ্খলা রক্ষায় ৯টি চেকপোস্ট ও ১২টি পেট্রোল টিমসহ গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে।’
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানিয়েছেন, নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৮০০ মেট্রিকটন খাদ্যপণ্য ও ৩২ লাখ টাকার সমপরিমাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যার মুখে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে রাখাইনের সামরিক অভিযানে ‘মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ’র অভিযোগ তোলা হয়েছে। সেখানে চলমান সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ত্রাণকর্মীদের অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি তাগিদ দেওয়া হয়েছে।