X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

যমুনা পাড়েই ইলিশের হাট

টাঙ্গাইল সংবাদদাতা
১৯ অক্টোবর ২০১৭, ১৫:১০আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০১৭, ১৬:১৪

নৌকায় বসেই ইলিশ বিক্রি করছেন জেলেরা

১ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা নিষেধ থাকলেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে একটি চক্র ইলিশ শিকার করেছে। এ চক্রটি রাতের অন্ধকার আর দিনের আলো কোনও সময়েই মা ইলিশ ধরা থেকে থেমে থাকেনি। বরং বাজারে ইলিশ কম থাকায় এই সময়টাকেই তারা ইলিশ ধরা জন্য বেছে নিয়েছে। মৎস্য বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন মা ইলিশ ধরা বন্ধে ছোট খাটো কিছু পদক্ষেপ নিলেও তা ইলিশ নিধন বন্ধে কার্যকরি কোনও ভূমিকা রাখতে পারছে না। হাজার টাকা দরের ইলিশ যমুনা পাড়েই বিক্রি করছে মাত্র দু’শ টাকা কেজি দরে। জেলার নাগরপুরের চর সলিমাবাদ এলাকার ভুতের মোর, সেতু সংলগ্ন গোরিলাবাড়ি, বেলটিয়ার মুকতলা নামকস্থানে হাঁট বসিয়ে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশ। প্রশাসনের কথা বললেও অজ্ঞাত কারণে বিক্রেতাদের ভেতর প্রশাসনের কোনও ভয় নেই। এমন কি মা ইলিশ ধরা নিষেধ করতে গিয়ে অনেককেই পড়তে হয়েছে বিপাকে।

যমুনার পাড়ে বসে ইলিশ বিক্রি করছেন জেলেরা

ভূঞাপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত)মাসুম বিল্লাহ জানান, ভূঞাপুর যমুনা নদীতে মা ইলিশের মৎস্য জোন না থাকায় জেলেরা কোনও সরকারি অর্থ সহায়তা পাচ্ছে না। ফলে অনেকেই গোপনে ইলিশ ধরার চেষ্টা করছে। তবে সারাদেশের মতো ভূঞাপুরেও ইলিশ ধরা বন্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে।

কালিহাতী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল হালিম জানান, মা ইলিশ ধরার বিরুদ্ধে প্রতিনিয়তই অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে কোনও জেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না।

সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, যমুনা নদী থেকে কারেন্ট জাল অবাধে মা ইলিশ ধরা হচ্ছে। টাঙ্গাইল সদর, ভূঞাপুর ও কালিহাতী উপজেলার বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকার যমুনা থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় চার শতাধিক জেলে প্রায় ২০ থেকে ২৫টন মা ইলিশ ধরছে।

ইলিশ ধরায় ব্যাস্ত জেলেরা

জেলেরা জানায়, নৌ পুলিশ ও মৎস্য কর্মকর্তাদের টাকা ও মাছ দিয়ে তারা নদীতে ইলিশ মাছ ধরছে। পরে ইলিশগুলো নিয়ে তারা কয়েকটি পয়েন্টে একত্রিত হয়ে সাধারণ মানুষ ও মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে কেজি প্রতি দুইশ’ থেকে তিনশ’ টাকায় বিক্রি করছে।

মাছ বিক্রি করতে আসা জেলেরা জানান,‘মাছ ধরা নিষিদ্ধ জেনেও পেটের দায়ে মা ইলিশ ধরে বিক্রি করছি। সরকারিভাবে কোনও অর্থ সহায়তা পাইনি। এছাড়া মাছ ধরতে পুলিশ ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের টাকা ও মাছ দিতে হয়। অনেক সময় প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে নদী থেকেই মাছ জোর করে ছিনিয়ে নেয়া হয়।

  বিভিন্ন জায়গা ইলিশ বিক্রি করছেন জেলেরা

গোহালিয়াবাড়ির সচেনতন মহল জানান, আফজালপুর গ্রামটাই নদীর মধ্যে। এখানকার সব মানুষই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। সরকারিভাবে কোনও সহায়তা তারা পায়নি। ইলিশ মাছ ধরা বন্ধের জন্য সরকার যদি আগে থেকে জেলেদের আর্থিক সহায়তা করতো তাহলে যমুনা নদী থেকে মা ইলিশ ধরা বন্ধ হতো।

বঙ্গবন্ধু সেতু নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাবর আলী জানান, স্বল্পসংখ্যক লোকবল দিয়ে রাতে যমুনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করা খুবই কষ্ট। এছাড়া ফাঁড়ির জন্য বরাদ্দকৃত বোডটিও (নৌকা) অনেকদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। বোড সঙ্কটের কারণে মাছ ধরা বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছে না। তারপরও নৌপুলিশের পক্ষ থেকে নদীতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।

টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, ইলিশ রক্ষায় বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। যমুনা নদীকে ইলিশ জোন ঘোষণা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর তা করা গেলে জেলেরা আগামী বছর থেকে সব রকম সুবিধা পাবে।

আরও পড়তে পারেন: জঙ্গি মারজানের বোনের রিমান্ড শুনানির তারিখ পেছাল 

 

 

/জেবি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
রৌমারীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলা
রৌমারীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলা
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস