X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিপদসীমার ওপরে ব্রহ্মপুত্রের পানি, আতঙ্কে নিম্নাঞ্চলের মানুষ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
১৩ জুলাই ২০১৯, ০২:৩৬আপডেট : ১৩ জুলাই ২০১৯, ০২:৩৬

বিপদসীমার ওপরে ব্রহ্মপুত্রের পানি, আতঙ্কে নিম্নাঞ্চলের মানুষ কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার চার সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে তিস্তা, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। এতে এসব এলাকার অনেক বসতভিটার উঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, ছোট হাট-বাজার ও বিভিন্ন জমির ফসল। এর ফলে বন্যা আতষ্কে রয়েছে নদী তীরবর্তীসহ নিম্নঞ্চলের মানুষ।
শুক্রবার (১২ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান।
তিনি বলেন, 'টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রসহ নদ-নদীগুলোর পানি বাড়তে থাকে। শুক্রবার সকালেও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপদসীমার ২১ সে. মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কিন্তু সন্ধ্যায় ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়ে চার সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তা ৬, ঘাঘট ৪৪ ও করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমার ১৪০ সে. মে. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আরও দুইদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। এতে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রের আরও কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করবে। সবমিলে জেলার চার উপজেলায় মাঝারি বন্যার আশষ্কা করা হচ্ছে। নদী ভাঙন রোধে বেশ কিছু জায়গায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের বিভিন্ন অংশ মেরামতের কাজ চলছে। জরুরি ভাঙন ঠেকাতেও সব প্রস্তুতি নেওয়া আছে।’ বিপদসীমার ওপরে ব্রহ্মপুত্রের পানি, আতঙ্কে নিম্নাঞ্চলের মানুষ
এদিকে, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা নদী, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চলের অন্তত ২০টি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার প্রায় দুই হাজার পরিবারের উঠোনে পানি ঢুকে পড়েছে। গ্রামীণ সড়কগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বন্যার আশঙ্কা দেখে অনেক মানুষ নিরাপদ স্থানে অবস্থান নিচ্ছেন।

টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে একদিকে যেমন বন্যা আতষ্ক বিরাজ করছে অন্যদিকে নদীর ভাঙনে শিকার হয়ে দিশেহারা হচ্ছেন অনেকে। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অধিকাংশ এলাকা। গত ১৫ দিনে সুন্দরগঞ্জ, সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার অন্তত ২০টি পয়েন্টে নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে পাঁচ শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালাসহ ফসলের জমি। বন্যা আর ভাঙন আতষ্কে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সহায়-সম্বল নিয়ে কেউ কেউ উঁচু জায়গা কিংবা অন্যর বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন।
বিপদসীমার ওপরে ব্রহ্মপুত্রের পানি, আতঙ্কে নিম্নাঞ্চলের মানুষ শুক্রবার সকালে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া হরিপুর ইউনিয়নের বন্যা ও নদী ভাঙন কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেছেন ইউএনও মো. ছোলাইমান আলী। এছাড়া বুধবার দুপুরে সদরের কামারজানিতে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন ইউএনও উত্তম কুমার রায়। এসময় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের খোঁজখবর নিয়ে তালিকা করে তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তারা। এসময় ইউএনওদের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিসহ সরকারি দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফুলছড়ির ফজলুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হানিফ প্রামাণিক বলেন, এভাবে পানি বাড়লে এই ইউনিয়নের অধিকাংশ পরিবারের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়বে। এছাড়া নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন প্রায় দুই শতাধিক পরিবার। বন্যা ও ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ১৫০ পরিবারকে ত্রাণ সহায়তার দাবি জানাচ্ছি।’

/এআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ভারতের একটি হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ৬
ভারতের একটি হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ৬
কুষ্টিয়ার তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস
কুষ্টিয়ার তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস
‘গাজার গণকবরে অন্তত ২০ জনকে জীবন্ত দাফন’
‘গাজার গণকবরে অন্তত ২০ জনকে জীবন্ত দাফন’
‘বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়তে হবে’
‘বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়তে হবে’
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা