X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

সুন্দরবনে ৩ বছরে বাঘ বেড়েছে আটটি

এস এম সামছুর রহমান, বাগেরহাট
২৯ জুলাই ২০১৯, ০৯:৫৯আপডেট : ২৯ জুলাই ২০১৯, ১০:৩৫

বাঘ সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে গত ৩ বছরে বাঘের সংখ্যা ১০৬ থেকে বেড়ে ১১৪ হয়েছে। অর্থাৎ ৩ বছরে বাঘ বেড়েছে আটটি। সর্বশেষ বাঘ জরিপ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ক্যামেরা ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে জরিপটি করা হয়। বনদস্যুদের আত্মসমর্পণ ও চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্য কমায় বাঘের সংখ্যা বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুন্দরবনকে বন্যপ্রাণীদের জন্য নিরাপদ করা গেলে দ্রুত বাঘের সংখ্যা বাড়বে।

সুন্দরবন বিভাগের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, ১৯৭৫ সালের জরিপে সুন্দরবনে বাঘ ছিল ৩৫০টি। ১৯৮২ সালে জরিপে ৪২৫টি এবং ১৯৮৪ সালে অভয়ারণ্যের ১১০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় জরপি চালিয়ে ৪৩০-৪৫০টি বাঘ থাকার কথা জানানো হয়। ১৯৯২ সালে ৩৫৯টি, ১৯৯৩ সালে সুন্দরবনের ৩৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় প্যাগমার্ক পদ্ধতিতে জরিপ চালিয়ে ৩৬২টি বাঘ থাকার কথা জানা যায়। ২০০৪ সালে জরিপে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি। ওই সময়ে বাঘের পায়ের ছাপ গণনা করে জরিপ করা হতো। ২০১৫ সালের জরিপে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে দাঁড়ায় ১০৬টিতে। হঠাৎ করে বাঘের সংখ্যা ৪০০ থেকে ১০৬ হওয়ায় ব্যাপক আলোচনায় আসে বিষয়টি। চলতি বছরের ২২ মে সর্বশেষ বাঘ জরিপ অনুযায়ী, বাঘের সংখ্যা বেড়ে ১১৪টি হয়েছে।

২০০১-২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫০ বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে স্বাভাবিকভাবে মারা গেছে মাত্র ১০টি। ১৪টি বাঘ পিটিয়ে মেরেছে  স্থানীয়রা। ২০০৭ সালে একটি মারা যায় সিডরে। বাকি ২৫ বাঘ হত্যা করেছে চোরা শিকারিরা।

বাগেরহাটের শরণখোলায় কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপের সদস্য রাসেল আহম্মেদ বলেন, ‘লোকালয়ে আসা বাঘ নিরাপদে ফেরাতে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হয়েছে। যার ফলে এখন আর মানুষ বাঘ পিটিয়ে মারে না।’

সুন্দরবন বিশেষজ্ঞ ও সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘বনদস্যুদের প্রধান টার্গেট হচ্ছে বাঘ। তারা বাঘ শিকার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার করে থাকে। সুন্দরবনের পাশে যেকোনও ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন থেকে সরকারকে বিরত থাকতে হবে।’

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহমুদুল হাসান জানান, বনদস্যুদের আত্মসমর্পণ এবং শিকারিদের দৌরাত্ম্য কম হওয়ায় রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা বেড়েছে। বাঘের অবাধ চলাচলের জন্য সুন্দরবনের অর্ধেকেরও বেশি এলাকাকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে টহল ফাঁড়ি। পাশাপাশি চোরা শিকারিদের তৎপরতা বন্ধে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট পেট্রোলিং চালু করা হয়েছে। বাঘের প্রজনন মৌসুম জুন-আগস্ট এই তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটকদের আসা বন্ধ করতে যাচ্ছে বন বিভাগ। এতে প্রজনন, বংশ বৃদ্ধিসহ বাঘ অবাধ চলাচল করতে পারবে। সুন্দরবনকে বন্যপ্রাণীর জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ করতে কাজ করছে বন বিভাগ।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার তালুকদার বলেন, ‘বর্তমান সরকার বাঘের সংখ্যা বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। সুন্দরবন দস্যুমুক্ত করা হয়েছে। যার সুফল কিন্তু দেখা যাচ্ছে। তিন বছরে ৮টি বাঘ বেড়েছে। সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাবে।’

 

/এসটি/এমএমজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ঘামে ভেজা ত্বকের যত্নে...
ঘামে ভেজা ত্বকের যত্নে...
চট্টগ্রামে ক্রিকেটারদের ‘ক্লোজড ডোর’ অনুশীলন
চট্টগ্রামে ক্রিকেটারদের ‘ক্লোজড ডোর’ অনুশীলন
হাসপাতালের ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১০ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
হাসপাতালের ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১০ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
রাঙামাটিতে ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত
রাঙামাটিতে ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প বাংলাদেশের পর্দায়
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প বাংলাদেশের পর্দায়
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
তাপপ্রবাহের গেটওয়ে যশোর-চুয়াডাঙ্গা
তাপপ্রবাহের গেটওয়ে যশোর-চুয়াডাঙ্গা