X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

গরুর চামড়া ১০০-৫০০, আর ছাগলের ৫-২০ টাকায় বিক্রি

নাজমুল হুদা নাসিম, বগুড়া
১৩ আগস্ট ২০১৯, ০৯:৫২আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০১৯, ১০:০৬

বিক্রির জন্য স্তূপ করে রাখা চামড়া বগুড়ায় কোরবানির পশুর চামড়া পানির দরে বিক্রি হয়েছে। গরুর চামড়া ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা এবং ছাগল-ভেড়ার চামড়া ৫-২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এরপরও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা নিজের পুঁজি দিয়ে চামড়া কিনে বিক্রি করতে হিমশিম খেতে হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা প্রতিবছরের মতো কোরবানি ঈদের দিন (সোমবার, ১২ আগস্ট)  এলাকা ভাগ করে চামড়া কেনেন। আকার ভেদে গরুর চামড়া ১০০-৫০০ টাকায় এবং ছাগলের চামড়া ৫-২০ টাকায় কেনেন। অধিকাংশ কোরবানি দাতা দ্বিতীয় ক্রেতা না আসায় বাধ্য হয়েই কম দামে চামড়া বিক্রি করেছেন। কেউ কেউ রাগ করে ব্যবসায়ীদের চামড়া না দিয়ে এতিমখানায় পৌঁছে দিয়েছেন। ২-৩ বছর আগেও চামড়ার বাজার চড়া ছিল। তখন শুধু গরুর মাথার চামড়া বিক্রি হয়েছে ২০-২৫ টাকায়। গত কয়েক বছর লোকসান হওয়ায় এবার মৌসুমি ব্যবসায়ীরা সতর্কতার সঙ্গে চামড়া কিনেছেন।

শহরের সুলতানগঞ্জ পাড়ার শাহাদত ইসলাম তূর্য নামে এক অটো রিকশা চালক জানান, তারা চার ভাগে প্রায় ৫২ হাজার টাকায় একটি গরু কোরবানি দিয়েছেন। তবে গরুর চামড়া বিক্রি করেছেন মাত্র ৩০০ টাকায়। তার প্রতিবেশী রতন শেখ ৫৪ হাজার টাকা মূল্যের গরুর চামড়া একই দামে বিক্রি করেছেন।

বিক্রির জন্য স্তূপ করে রাখা চামড়া সদরের সাবগ্রাম এলাকার আকাশ হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী জানান, তারা ৫ ভাগে লাখ টাকার গরু কোরবানি দিয়েছেন। তবে গরুর চামড়া বিক্রি করেছেন মাত্র ৫০০ টাকা। অথচ অন্তত ২০ জন গরিব মানুষ তার কাছে চামড়া বিক্রির টাকা চেয়েছেন।

সোমবার শহরের বাদুড়তলা থেকে চকসূত্রাপুর পর্যন্ত চামড়ার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রচুর চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। শুধু শহর নয়, বিভিন্ন উপজেলা থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যানবাহনে করে চামড়া এনেছেন।

গাবতলী উপজেলার মারিয়া গ্রামের চামড়া ব্যবসায়ী মন্টু মিয়া জানান, গত কয়েক বছর চামড়া ব্যবসা করে মহাজনের কাছে ২৮ লাখ টাকা বকেয়া পড়েছে। তাই এবার সতর্কতার সঙ্গে চামড়া কিনেছেন। তিনি গরুর চামড়া ১০০-৫০০ টাকার মধ্যে কিনেছেন।

একই উপজেলার গুড়টোপ গ্রামের আজিজার রহমান ও মজিদ মাস্টার জানান, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা তাদের গ্রামে সাতটি গরু, ২৪টি ছাগল ও তিনটি ভেড়ার চামড়ার দাম বলেছেন তিন হাজার টাকা। বেশির দামের আশায় ভ্যানে চামড়াগুলো শহরে বিক্রি করতে এসেছেন। এখানে এসেও একই দাম পেয়ে হতাশ হয়েছেন।

বিক্রির জন্য আনা চামড়া শহরের চামড়ার আড়তগুলোয় কথা বলে জানা গেছে, ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে লাখ লাখ টাকা পাওনা বকেয়া। এ কারণে তারাও এবার বাকিতে চামড়া সরবরাহ করবেন না। প্রয়োজনে লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে রাখবেন। এ কারণে তারাও ছোট ব্যবসায়ীদের অধিক দামে চামড়া না কেনার পরামর্শ দেন।

চামড়ার দাম কম হওয়ায় কোরবানি দাতারা হতাশ। তারা জানান, মাত্র কয়েক বছর আগে একটি গরুর চামড়া দুই থেকে আড়াই হাজারে এবং ছাগলের চামড়া ৫০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পশুর দাম অনেক বেড়ে গেলেও চামড়ার দাম নেই বললেই চলে। এতে বিভিন্ন মাদ্রাসার এতিম শিশুদের হক নষ্ট করা হয়েছে। এজন্য তারা চামড়া ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে দায়ী করেছেন।

তাদের মতে, গরিবের হক নষ্ট করে ধনীরা আরও ধনী হচ্ছেন।

 

/এসটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস আর নেই
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস আর নেই
পথের পাশের বাহারি শরবতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা?
পথের পাশের বাহারি শরবতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা?
মন্ত্রণালয়ে সভা করে ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
মন্ত্রণালয়ে সভা করে ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ