রংপুর-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম রাজু। দলীয় নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ ও নগরীর প্রধান সড়ক অবরোধের মধ্যেই আজ সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল পৌনে ৫টার দিকে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলেন। জাতীয় পার্টিকে সুযোগ করে দিতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে তিনি এই পদক্ষেপ নিলেন।
এর আগে দুপুর থেকে নগরীর কাছারীবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের প্রবেশপথে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিকাল ৪টার দিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম রাজু দলীয় নেতাদের নিয়ে সেখানে এলে কর্মীরা রাস্তায় শুয়ে পড়ে তাকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করার অনুরোধ জানান। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কাছারীবাজার এলাকায় নগরীর প্রধান সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ অবস্থায় সড়কে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।
এরপর নেতাকর্মীদের বুঝিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রাজু রিটার্নিং অফিসার জিএম শাহাতাব উদ্দিনের কার্যালয়ে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে সেখানেও নেতাকর্মীরা তার পথরোধ করেন। তাদের দাবি, আওয়ামী লীগের প্রার্থী রংপুর সদর আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী থাকবেন। কোনও অবস্থাতেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে না। পরে বিক্ষুব্ধ কর্মীদের সরিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রাজু দলীয় কয়েকজন নেতাকে সঙ্গে নিয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে গিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন দাখিল করেন। রিটার্নিং অফিসার জিএম শাহাতাব উদ্দিন আবেদন গ্রহণ করে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার কথা জানান।
এদিকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার পর রাজু সাংবাদিকদের জানান, ‘রংপুরের মানুষের দুর্ভাগ্য বারবার আমাদের পেছনে চলে যেতে হচ্ছে। রংপুরের জনগণ চাচ্ছিলো এ আসনে নৌকা মার্কার প্রার্থী থাক। কিন্তু জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে আমাকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকেছিলেন। আমি দেখা করলে আমাকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন তিনি।’ এ কথা বলার সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমি দলের নির্দেশ পালন করেছি।’
এদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় এখন প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়ালো ছয় জনে। এরা হলেন জাতীয় পার্টির শাদ এরশাদ, বিএনপির রিটা রহমান, জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী প্রার্থী এরশাদের ভাতিজা আসিফ শাহারিয়ার (তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন), এনপিপির সফিউল আলম, খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান এবং গণফ্রন্টের কাজী মো. শহিদুল্লাহ। আগামীকাল মঙ্গলবার প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বিতরণ করা হবে। ৫ অক্টোবর রংপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান রিটার্নিং অফিসার জিএম শাহাতাব উদ্দিন।