কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে ‘সুদর্শন’ জাতের ফুলকপি চাষ। আগাম জাতের এই ফুলকপি বিক্রি করে চাষিরা লাভবানও হচ্ছেন।
সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বাহাউদ্দিন সেক জানান, রাজবাড়ী জেলা সদরের পদ্মা নদীর চরাঞ্চলসহ কয়েকটি ইউনিয়নে ন্যাশনাল এগ্রিকালচার টেকনোলজি (এনএটিপি-২) প্রকল্পের আওতায় এই ফুলকপির চাষ করা হয়েছে। উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবে সুদর্শন জাতের ফুলকপি চাষ হাসি ফুটিয়েছে কৃষকের মুখে। কৃষকদেরকে কৃষিবিষয়ক নানাবিধ পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেওয়ার মাধ্যমে নিরাপদ সবজি চাষে দিন দিন আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে। পাশাপাশি আগাম শীতকালীন সবজি চাষের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। এতে তাদের ভাগ্যের চাকাও ঘুরছে। কৃষকেরা আগাম শীতকালীন সবজি চাষে অনেক লাভবান হচ্ছেন। রাজবাড়ী জেলার শাক সবজি বিষমুক্ত ও নিরাপদ হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পাশের জেলার চাহিদাও পূরণ হচ্ছে।
সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড গোপালবাড়ি গ্রামের ফুলকপি চাষী খলিল বলেন, ‘দেড়বিঘা জমিতে কৃষি অফিসের প্রদর্শনী প্লটে আগাম ফুলকপি চাষ করেছি। ফলন খুব ভালো হয়েছে। এই পর্যন্ত এক ক্ষেত থেকেই ১০ বার ফুলকপি উঠিয়ে স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি করেছি। প্রতি কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আমার মাত্র ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছিল।’
সাজেদা বেগম বলেন, ‘মিষ্টি কুমড়া চাষ করছি। ইতোমধ্যে ফুল ফুটেছে। পাশাপাশি বেগুন চাষ করেছি। বেগুনের ভালো ফলন হয়েছে। কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি করছি।’
নয়নসুখ গ্রামের স্থানীয় কৃষক মালেক প্রামাণিক বলেন, ‘এই বছর শীতের আগে আগে যেসব কৃষক শীতকালীন শাক সবজি যেমন ফুলকপি, বাধাকপি, টমেটো, শিম, বেগুন, মুলা ও শশার চাষ করেছে, তারা বেশ লাভবান হয়েছে।’
বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি চাষের জেলা হিসেবে পরিচিত রাজবাড়ী জেলা সদরের বরাট, মূলঘর, বসন্তপুর, শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় সারা বছরই চাষ হয় নানা জাতের সবজি। মৌসুমী চাষের পাশাপাশি একটু বেশি লাভের আশায় আগাম চাষাবাদে এবার শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন এই অঞ্চলের কৃষকেরা।
সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বাহাউদ্দিন সেক জানান, রাজবাড়ী সদর উপজেলায় প্রতি বছর প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হয়। এবার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে।