X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

খুলনা আ.লীগের সম্মেলন উদ্বোধন, নেতৃত্বে আসছে নতুন মুখ

খুলনা প্রতিনিধি
১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৩:৪৩আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৩:৫৭

খুলনা আ.লীগের সম্মেলনের উদ্বোধন করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা

খুলনা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়েছে। এ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন মুখের চমক আসতে পারে বলে সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা গেছে। এ নিয়ে দলের ভেতরে ও বাইরে চলছে নানা গুঞ্জন। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে সম্মেলনের প্রথম পর্ব উদ্বোধন করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন আওয়ামী লীগে সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি। জেলা আওয়ামী লীগে সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদের সভাপতিত্বে শুরুতেই স্বাগত বক্তৃতা দেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। প্রধান বক্তা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহ্বুব উল আলম হানিফ।

নগর আওয়ামী লীগে সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারীর সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, শ্রম সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, নির্বাহী কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন ও অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়। স্থানীয় নেতাদের মধ্যে বক্তৃতা করবেন সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, আব্দুস সালাম মুর্শিদী, মো. আক্তারুজ্জামান বাবু ও গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার প্রমুখ।

জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগে সভাপতি পদের জন্য তৎপরতা চালাচ্ছেন বর্তমান সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও খুলনা ৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব আলী সানা এবং আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট এম এম মুজিবুর রহমান।

সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহী প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী, সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামরুজ্জামান জামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামান বাবু এমপি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, বটিয়াঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খান আশরাফুল ইসলাম, বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মোর্তুজা রশিদী দারা।

মহানগরের সভাপতি পদের জন্য রয়েছেন বর্তমান সভাপতি ও খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র আলহাজ তালুকদার আব্দুল খালেক, এছাড়া খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েলের নামও নেতাকর্মীদের মুখে আলোচিত হচ্ছে। আর সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য তৎপর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ মিজানুর রহমান মিজান, সদর থানা শাখার সভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি এবং সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলাম, মহানগর যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সরদার আনিসুর রহমান পপলু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা এমডিএ বাবুল রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা মো. আশরাফুল ইসলাম।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলের প্রবীণ নেতা শেখ হারুনুর রশীদ দীর্ঘদিন ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ১৯৯২ সালে প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন। পরে একাধারে ৪ বার সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। আজ পর্যন্ত তিনিই এ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এবার দায়িত্ব পেলে ৫ম বারের মত সভাপতি হবেন। এর আগে ১৯৮১ ও ১৯৯১ সালে দু’বার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পাইকগাছা-কয়রার বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মো. সোহরাব আলী সানা একজন সফল আইনজীবী। ৫৪ বছরের রাজনৈতিক জীবন ১৯৯৭ সালে তিনি জেলা কৃষক লীগের আহ্বায়কের এবং একই বছর জেলা কৃষক লীগের সম্মেলনে জেলা কৃষকলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৬ আসনে তিনি দলীয় প্রার্থী হিসেবে জামায়াতে ইসলামী প্রার্থীকে পরাজিত করেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবার নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের হাইকমান্ড প্রার্থীদের আমলনামার ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে প্রার্থীদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে প্রার্থীর পারিবারিক, সামাজিক ও সাংগঠনিক অবস্থান, তাদের আয়ের উৎস, তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে কতোটুকু সম্পর্ক এবং দলের দুর্দিনে প্রার্থীর ভূমিকা সম্পর্কে তথ্য নেওয়া হয়েছে। 

দলীয় প্রধানের ঘোষণা আগে খুলনার শীর্ষ স্থানীয় নীতি নির্ধারকরা প্রার্থীদের বিগত দিনের কর্মকাণ্ড, দুর্নীতি ও মাদক বিক্রিসহ কোনও অপকর্মে মদদ দেন কিনা সেসব বিষয়েও খোঁজ নিয়েছেন।

এদিকে, প্রার্থীদের আমলনামা সম্পর্কে খোদ দলীয় প্রধানের তথ্য সংগ্রহের সংবাদে খুশি আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তৃণমূলের মতে নিজ দলের মধ্যে চলমান শুদ্ধি অভিযান দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। নেতৃত্ব গঠনের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে তারা করছে।  

তৃণমূলের মতে, যারা ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, খালেদা-নিজামীর আন্দোলন ও ওয়ান ইলেভেনের সময় রাজপথ থেকে তৃণমূল নেতাদের রক্ষা করেছে, বিভিন্ন সময় জেল-জুলুম হুলিয়ার সম্মুখীন হয়েছেন, ৯ উপজেলার সব ওয়ার্ডের কর্মীদের সমস্যা সমাধানে দিন-রাত কাজ করেছেন এবং যাদের নামে মাদক ও দুর্নীতির গন্ধ নেই তাদের এ দায়িত্ব দেওয়া হোক। 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘জেলা ও মহানগরে নেতৃত্ব প্রথমত আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করার চেষ্টা করা হবে। তাতে সমাধান না হলে কাউন্সিল অধিবেশন হবে। সম্মেলনে নগরের ৩২৪ জন ও জেলায় ৫২৮ কাউন্সিলর রয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আলোচনায় যে কারও নাম আসতে পারে। কর্মী সমর্থকরা তার প্রিয় নেতার নামের পক্ষে থাকবেন এবং কথা বলবেন। ’

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ মিজানুর রহমান মিজান বলেন,‘মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কে আসবেন। সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েই দলের সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের খুলনা পাঠিয়েছেন।’

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে শেখ হারুনুর রশিদ সভাপতি ও এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর নয় মাস পর গঠিত হয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি। ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা রশিদী সুজার মৃত্যু হয়। অপরদিকে, ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলনে তালুকদার আব্দুল খালেক সভাপতি ও মিজানুর রহমান মিজানকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এরপর ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

 

 

 

/জেবি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বুয়েটে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন শিক্ষার্থীদের
বুয়েটে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন শিক্ষার্থীদের
শিশুশিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারপিট, মাদ্রাসাশিক্ষক আটক
শিশুশিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারপিট, মাদ্রাসাশিক্ষক আটক
এবার ‘হুব্বা’ নামে হলো গানচিত্র
এবার ‘হুব্বা’ নামে হলো গানচিত্র
আঙুরের গোড়া কালো হয়ে যাচ্ছে? জেনে নিন টিপস
আঙুরের গোড়া কালো হয়ে যাচ্ছে? জেনে নিন টিপস
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা