X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

ধানের দাম কম, ক্ষতি পুশিয়ে নিতে আলু চাষে ব্যস্ত কৃষক

নীলফামারী প্রতিনিধি
১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৫:১৬আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৫:৩০

আলু চাষে ব্যাস্ত সময় পার করছে কৃষকরা

চলতি মৌসুমে আমন ধানের দাম কম হওয়ায় খরচের টাকা উঠছে না। তাই ধানের ক্ষতি পুশিয়ে নিতে নীলফামারী জেলার কৃষকরা আলু চাষ করছেন। কৃষি বিভাগ বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আলুর বাম্পার ফলনের আশা রয়েছে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার ২০ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উপজেলা ভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে সদরে সাত হাজার ১১০ হেক্টর, সৈয়দপুরে এক হাজার ৪২০, ডোমারে এক হাজার ৬১০, ডিমলায় এক হাজার ৩৩০, জলঢাকায় তিন হাজার ২৭০ ও কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ছয় হাজার ১১৫ হেক্টর জমি ধরা হয়েছে। আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৭ হাজার ২৫২ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত ১৮ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দুই হাজার ৭৮৫ হেক্টর জমি ঘাটতি থাকলেও আলু উৎপাদনের নিদৃষ্ট লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ।

এই অঞ্চলের মাটি প্রকারভেদে কার্ডিনাল ও ডায়মন্ড জাতের আলুর ভাল হয়। আলু আবাদে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করতে উপজেলা ভিত্তিক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক।

জেলার জলঢাকা উপজেলার দক্ষিণ দেশিবাই গ্রামের আলু চাষি আব্দুস সামাদ বলেন, ‘বাজারে আমন ধানের দাম কম। লোকসান কাটিয়ে উঠতে আমরা এবার আলু চাষ করছি। এবার আগাম আলুর যে দাম পাওয়া গেছে, তাতে কৃষক খুবই খুশি ও লাভবান হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে লাগানো আলুর বাজার দর পরবর্তী সময় কেমন থাকবে তা নিয়ে শঙ্কিত রয়েছে কৃষক।

একই এলাকার কৃষক জাহেনুর ইসলাম বলেন,‘আমি দুই বিঘা জমিতে আলু রোপন করেছি। এখন চারা বের হতে শুরু করেছে। অনেকেই আলুতে সেচ দিচ্ছে কিছুদিন পরে তুলে ফেলবে।’

জেলা সদরের রামনগর ইউনিয়নের বাহালী পাড়া গ্রামের আলু চাষি আশরাফ আলী বলেন,‘মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কৃষক ধান উৎপাদন করে। আর সেই ধান বাজারে উঠার সঙ্গে সঙ্গে ধস নামে। এ কারণে চাষিদের বছরের পর বছর লোকশান গুনতে হয়। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী দেশীয় উৎপাদিত পণ্য বেচাকেনা করে অধিক লাভবান হয়। অন্যদিকে কৃষকদের লোকশানের বোঝা কাঁধে নিয়ে মাঠে ফসল ফলাতে হয়। প্রতি বছর আমন মৌসুমে সরকার লটারির মাধ্যমে ধান ক্রয় করে। এতে গুটি কয়েক কৃষক উপকৃত হলেও সিংভাগ কৃষক বঞ্চিত হয়। সেখানেও দালালের পাল্লায় পড়ে কৃষক ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে ধান চাষ কমিয়ে আলু, মরিচ, পেঁয়াজ, গম, ভূট্টা, আদা ও হলুদ চাষের পরিকল্পনা নিয়েছি। ভাত খেতে যতটুকু ধান লাগে তাই আবাদ করবো। ধান এখন কৃষকের গলার কাঁটা।’

তিনি বলেন, ‘বর্গাচাষীরা জমি চুক্তি নিয়ে আবাদ করে লোকশান গুনছেন। বাজারে দাম না থাকায় তারা পথে বসেছে। তুলনামূলকভাবে আলু চাষে লাভ। প্রকার ভেদে  আলু ৩০-৩৫ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে, এক কেজি আমন ধান বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৬ টাকায়। এতে দ্বিগুন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ধান চাষিরা।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন,‘আলু একটি লাভজনক ফসল যা সারা বছর ঘরে রেখে খাওয়া যায় ও বিক্রি করে নগদ অর্থ পাওয়া যায়। এবার বাজার দর ভালো থাকলে আলু চাষে কৃষক লাভবান হবে।’

 

/জেবি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী