প্রায় দু’মাস ধরে সার্ভার না থাকায় দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) পৌরসভার বাসিন্দারা জন্মনিবন্ধন ও মৃত্যুসনদ নিতে পারছেন না। ফলে সন্তানকে স্কুল কলেজে ভর্তি, জমি রেজিস্ট্রিসহ বিভিন্ন কাজে জন্মনিবন্ধন ও মৃত্যুসনদ না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা।
হাকিমপুর পৌরসভায় জন্মনিবন্ধন সনদ নিতে আসা রেজাউল করিম বলেন, ‘ভারতে চিকিৎসা করতে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট বানাতে হবে। এজন্য জন্মনিবন্ধন সনদ প্রয়োজন। পৌরসভায় গত সাত দিন ধরে ঘুরছি, কিন্তু সনদ পাচ্ছি না। তারা বলছে, সার্ভারের সমস্যার কারণে জন্মনিবন্ধন সনদ দেওয়া বন্ধ রয়েছে। আমার জরুরি প্রয়োজন। সনদ না পেয়ে বিপাকে পড়েছি।’
জেসমিন আরা নামে আরেকজন বলেন, ‘আমার বাচ্চাকে স্কুলে ভর্তি করাবো। জন্মনিবন্ধন সনদে ভুল থাকায় সমস্যা হচ্ছে। সংশোধনের জন্য গত বেশ কয়েকদিন ধরে পৌরসভায় ঘুরছি কিন্তু পাচ্ছি না। কম্পিউটার অপারেটর বলছে সার্ভার নেই সার্ভার আসলে হবে। কিন্তু সার্ভার কবে হবে তাও বলতে পারছে না। এভাবে প্রতিদিন পৌরসভায় গিয়ে হয়রানির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।’
আব্দুল করিম নামের একজন বলেন, ‘আমার বাবা মারা গিয়েছেন কিছুদিন আগে। তার মৃত্যুসনদের জন্য গত কয়েকদিন ধরে পৌরসভায় ঘুরছি, কিন্তু সার্ভারের সমস্যার কারণে পাচ্ছি না। জমি রেজিস্ট্রি করতে বাবার মৃত্যুসনদ খুব প্রয়োজন। সনদ না পাওয়ায় কাজটি আটকে আছে।’
হাকিমপুর পৌরসভার জন্মনিবন্ধন ও মৃত্যুসনদের কাজ করেন শামীম আহসান। তিনি বলেন, সার্ভার আপডেটের কার্যক্রম চলমান এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রায় দুই মাসের মতো সময় ধরে সার্ভার বন্ধ রয়েছে। এতে করে জন্মনিবন্ধন সনদ প্রদান, ভুল ত্রুটি সংশোধন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সেইসঙ্গে মৃত্যুসনদ প্রদানের প্রথম শর্ত হলো তার জন্মনিবন্ধন সনদ দিতে হবে তারপরে মৃত্যুসনদ প্রদান করা হবে। কিন্তু সার্ভার না থাকার কারণে জন্মনিবন্ধন বের না হওয়ার কারণে মৃত্যুসনদ প্রদান কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। এই দু’টি বিষয় নিয়ে আমরা খুব সমস্যার মধ্যে পড়েছি। জনগণকে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ সাময়িকভাবে সার্ভার বন্ধের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রেখেছে। কিন্তু দু’মাস হয়ে গেল। আর কতদিন লাগবে বলা যাচ্ছে না। তবে নতুন করে জন্ম নেওয়া শিশুদের জন্মনিবন্ধন সনদ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’
পৌরসভার মেয়র জামিল হোসেন বলেন, ‘প্রায় দুই মাসের মতো সময় ধরে সার্ভারের সমস্যার কারণে পৌরসভার জন্মনিবন্ধন সনদ প্রদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করছি সংশ্লিষ্ট দফতর এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এতে করে খুব দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে।’