নেত্রকোনায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি, জনসাধারণের স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে না চলা এবং দোকানে ভিড় করে কেনাকাটার ঘটনায় শনিবার (১৬ মে) থেকে পুরো জেলা লকডাউনের আওতায় চলে আসছে। জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, জেলার করোনা পরিস্থিতি দিনকে দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থায় ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতা এবং প্রশাসনের অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তাদের পরামর্শে পুনরায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১৪ মে) স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতা, জনপ্রতিনিধি,নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও সরকারি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে জেলা প্রশাসকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ১৬ মে থেকে পুনরায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, লকডাউন শিথিল করার কারণে বাজারে মাত্রাতিরিক্ত জনসমাগমের ফলে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উক্ত প্রেক্ষাপটে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, ওষুধ, কাঁচাবাজার এবং লকডাউনে অব্যাহতি প্রাপ্ত অন্যান্য সুবিধাসমূহ চলমান থাকবে। তবে অন্যসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই অবস্থা চলমান থাকবে।
বিজ্ঞপ্তিতে ঈদ বাজারের অর্থ কর্মহীন অসহায় মানুষের কল্যাণে ব্যয় করার অনুরোধ জানানো হয়।
বৈঠকে সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার রায়, পুলিশ সুপার আকবার আলী মুন্সি, পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম খান, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
গত ১০ মে থেকে মার্কেট ও দোকানপাট খোলার পরেই শহরে সাধারণ মানুষের চলাচল বেড়ে গেছে। চলাচলে সামাজিক দূরত্ব মানার কোনও বালাই দেখা যায়নি। মার্কেট ছাড়াও নেত্রকোনার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, বিমা ও অফিসেও সামাজিক দূরত্বের কোনও নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। একে অন্যের কাছাকাছি গাদাগাদি করে লেনদেন চলছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের মোড়ে মোড়ে টহল রয়েছে, তবে শহরে রিকশাসহ অন্যান্য যান চলাচল অব্যাহত আছে। এ অবস্থায় জেলায় করোনাভাইরাসের আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্টরা।