ঘুড়ির সুতা গলায় জড়িয়ে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘুড়ি ওড়ানো নিষিদ্ধ করেছে জেলা প্রশাসন। সোমবার (১৮ মে) জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইদানিং শহরে ব্যাপকহারে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আর ঘুড়ির সুতায় জড়িয়ে লোকজন আহত হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে ঘুড়ি ওড়ানো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে বলেও শোনা যাচ্ছে। এ ধরনের প্রতিযোগিতায় এর আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটেছিল। তাই সব ধরনের ঘুড়ি ওড়ানো ও প্রতিযোগিতা নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, গত ২ মে শহরের ফ্লাইওভারে ঘুড়ির সুতায় মুখ কেটে আহত হয় মধ্যপাড়া এলাকার সাহিম (২২) নামে এক যুবক। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সার্জারির মাধ্যমে তার গাল মুখে ২১৩টি শেলাইয়ের প্রয়োজন হয়।
গত ১১ মে মোরসালিন আহমেদ নামে অপর এক যুবক আহত হয়। তার গলায় ঘুড়ির সুতা লেগে গুরুতর আহত হয়। পরে ওই যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়।
গত ১৫ মে শহরের রামকানাই মার্কেটের কম্পিউটার স্কুলের মালিক সোলেমান হোসেন শহরের ওভারব্রিজে কেটে যাওয়া ঘুড়ির সুতা গলায় জড়িয়ে গুরুতর আহত হয়। অল্পের জন্যে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের পর স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আসে। পরে আজ জেলা প্রশাসন প্রজ্ঞাপন জারি করে ঘুড়ি ওড়ানো নিষিদ্ধ করে।
ঘুড়ি ওড়ানো নিষিদ্ধ করার করায় জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাকের) সহ-সভাপতি আব্দুন নূর বলেন, জেলা প্রশাসন সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পাইকপাড়া, কলেজ পাড়া, কান্দিপাড়া, মেড্ডা, মৌড়াইল, কাজীপাড়া, কালাইশ্রী পাড়া, সড়কবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার উঁচু ভবনে প্রতিদিন অন্তত হাজার ঘুড়ি ওড়ানো হয়। এসব ঘুড়ি ওড়ানোর আগে একে অপরের সঙ্গে কাটাকাটি খেলায় মেতে ওঠে। এজন্য সুতা ধারালো করতে মাঞ্জা দেওয়া হয়। ফলে ঘুড়ি কাটা গেলে অবশিষ্ট সুতো লাটাই দিয়ে টানার সময় অনেকের শরীরে লেগে আহত হচ্ছেন।