কিস্তি না পেয়ে ঋণ গ্রহিতার ১২৫ বস্তা ধান ও গবাদি পশু শুকর ও ছাগল নিয়ে গেছে ঋণদাতা সমিতির লোকজন। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের অর্ধেন্দু রায় এই ঘটনার শিকার হয়েছেন। তার জমিতে মাড়াই করে রাখা ধান ও গৃহপালিত শুকর, ছাগল ছিনিয়ে নিয়ে গেছে নবরুপ সমবায় সমিতি ও পূর্বাশা সমবায় সমিতির লোকজন। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার (৮ জুন) অর্ধেন্দু রায় অভিযোগ করে জানান, এই ঘটনায় তিনি আইনী ব্যবস্থা নিলে বা কাউকে বললে তাকে ডুমুরিয়া ছাড়া করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে সমিতির লোকজন।
স্থানীয়রা জানায়, ভুক্তভোগী অর্ধেন্দু রায় পাইকগাছা উপজেলার গজালিয়া গ্রাম থেকে জীবীকার তাগিদে ডুমুরিয়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর বিলে জমি বর্গা নিয়ে মাছ ও ধান চাষ করেন। সংকটে পড়ে নবরুপ সমবায় সমিতি ও পূর্বাশা সমবায় সমিতি থেকে ঋণ গ্রহণ করেন তিনি। কিস্তির টাকা ঠিকমতোই পরিশোধ করে আসছিলেন। কিন্তু করোনা প্রভাবের কারণে এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত আদায় না করার সরকারের নির্দেশনা পেয়ে তিনি কিস্তি পরিশোধ করেননি। কিন্তু গত ১ জুন থেকে সাধারণ ছুটি উঠিয়ে নেওয়ার পর নবরুপ সমবায় সমিতি ও পূর্বাশা সমবায় সমিতির লোকজন ২ জুন তার ঘেরে হানা দেয়। সেখানে মাড়াই করে রাখা ১২৫ বস্তা ধান (প্রায় দেড়শ মণ), শুকর ও ছাগল নিয়ে যায়। নবরুপ সমিতির লোকজন শুকর দুটি জবাই করে মাংস বিক্রি করে দিয়েছে। ছাগল ও ৪৫ বস্তা ধান পূর্বাশা সমিতির লোকেরা অন্য একজনের জিম্মায় রেখেছে।
নবরুপ সমবায় সমিতির কোষাধ্যক্ষ পিন্টু কবিরাজ জানান, অর্ধেন্দুর কাছে সুদ ও আসলসহ অনেক টাকা পাওনা রয়েছে। সে টাকা না দিয়ে চলে যেতে পারে। তাই সমিতি যে টাকা পাবে সে অনুযায়ি ধান ও শুকর আনা হয়েছে। অর্ধেন্দুর জন্য শুকরের ১ কেজি মাংস রেখে দেওয়া হয়েছে।
ডুমুরিয়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. সেলিম আক্তার নবরুপ সমিতির এই আচরণের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সরকারের নির্দেশ অমান্য করেছে তারা। এটি সম্পদ লুট করার সামিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত অর্ধেন্দু রায়কে সবরকমের আইনী সহায়তা দেওয়া হবে।