লালমনিরহাটে ‘সরকারি ওষুধ চোরচক্রের’ বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর গ্রেফতার দম্পতির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) বিকালে শহরের বিডিআরগেট পুরানবাজার এলাকার টাউন ফার্মেসিতে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখানে সরকারি ওষুধ পাওয়ায় ওই ফার্মেসি মালিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার নাম শরাফত হোসেন (৪০)।
গ্রেফতার শরাফত হোসেন লালমনিরহাট পৌর এলাকার ওয়ারলেস কলোনির মৃত শমসের আলীর ছেলে।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মাহফুজ আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গ্রেফতার হওয়া ওষুধ চোরচক্রের অন্যতম আসামি আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রেজা মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লালমনিরহাট শহরের টাউন ফার্মেসির মালিক শরাফত আলীকে সরকারি ওষুধসহ তার দোকান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই দোকানে ৬ প্রকার সরকারি ওষুধ পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, অপর আসামিদের গ্রেফতারের জন্য লালমনিরহাট সিভিল সার্জনের অনুমতির জন্য লিখিত চিঠি পাঠানো হয়েছে। অনুমতি পেলে ওই তিন সরকারি কর্মচারীকেও গ্রেফতার করা হবে।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় বলেন, এখনও পুলিশি গ্রেফতারের অনুমতির চিঠি হাতে পাইনি। চিঠি পাওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সিভিল সার্জনের তদন্ত কমিটিএদিকে, সরকারি ওষুধ উদ্ধার ও পুলিশের করা মামলার ঘটনায় লালমনিরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দীপঙ্কর রায়কে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায়। কমিটিকে আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে সিভিল সার্জন বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। সিভিল সার্জন নিজে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত মঙ্গলবার (২৩ জুন) ড্রাইভারপাড়া এলাকায় রেলওয়ের একটি ভাড়া বাসা থেকে ২৬ প্রকারের বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধসহ ১৭৫টি 'ডিজিটাল বডি ইলেক্ট্রনিক স্কেল' মেশিন উদ্ধার করে পুলিশ। এরমধ্যে জব্দ করা ওষুধের মূল্য নিরূপিত হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৪০৬ টাকা ও জব্দ করা ডিজিটাল স্কেলের মূল্য ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬২ হাজার টাকা। ওই ঘটনায় বাড়িরবাসিন্দা মো. আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রেজা মিয়া ও তার স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিনকে আটক করে পুলিশ। এর পরদিন পুলিশ বাদী হয়ে জেলার ৩টি সরকারি হাসপাতালের তিনজন স্টোর কিপারসহ ৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। মামলার অপর আসামিরা হচ্ছেন গ্রেফতার রেজার ভাই হামিদুর রহমান দুলু, সিভিল সার্জন অফিসের স্টোরকিপার মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে মুরাদ, কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের স্টোরকিপার জাকারিয়া ও আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের স্টোরকিপার মাহবুব আলম।
আগের সংবাদ:
লালমনিরহাটে সরকারি ওষুধ চোরচক্রের ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার দম্পতি কারাগারে