X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

নষ্ট রডের ওপরই ঢালাই, প্রতিবাদে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ

বাগেরহাট প্রতিনিধি
২৯ জুন ২০২০, ১৯:০৮আপডেট : ২৯ জুন ২০২০, ১৯:২০

চার মাস ধরে এভাবে ফেলে রাখা হয় ভবনের নির্মাণ কাজ মরিচা ধরা রডের ওপর ঢালাই শুরু করা হলে এলাকাবাসীর তীব্র প্রতিবাদের মুখে বাগেরহাটের কে বি ফতেপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চার তলা ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রায় চার মাস পানির মধ্যে রডের স্ট্রাকচার তৈরি করে রাখার পর রবিবার (২৮ জুন) সকালে হঠাৎ ঢালাইয়ের কাজ শুরু করে ঠিকাদার। এ সময় বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের কোনও কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।

এদিকে ১৮ মাস মেয়াদ কার্যাদেশ প্রদানের এক বছর দুই মাস অতিবাহিত হলেও ভবনটি নির্মাণে দৃশ্যমান কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, কে বি ফতেপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চার তলাবিশিষ্ট অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণে ২ কোটি ৮১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ভবন নির্মাণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস কাজী এন্টাইপ্রাইজকে ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। যার মেয়াদ দেওয়া হয়েছে ১৮ মাস।

স্থানীয়রা জানান, রবিবার সকালে হঠাৎ করে বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করেন কয়েকজন শ্রমিক। এ সময় কোনও প্রকৌশলী বা অফিসের কোনও কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। এমন অব্যবস্থাপনা দেখে এলাকাবাসী জড়ো হয়ে তীব্র প্রতিবাদ করেন। একপর্যায়ে জিল্লুর রহমান নামে বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের একজন ইঞ্জিনিয়ার ঘটনাস্থলে এসে কোনও সমস্যা নেই বলে কাজ করার নির্দেশ দেন। এতে এলাকাবাসী আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

স্থানীয় মীনা ফারুক বাবু বলেন, 'এই বিদ্যালয়টি আমাদের প্রাণের স্পন্দন। গত চার মাস আগে এখানে রড বেঁধে রেখে গেছে। পানির ভিতর লোহার রড থাকায় তা ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। কয়েক দফায় স্থানীয়রা কাজ শুরুর জন্য যোগাযোগ করলেও তাতে কেউ কর্ণপাত করেননি। চার তলা একটি ভবন এভাবে নির্মাণ হবে—এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমরা কাজ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।'

স্থানীয় আলম গাজী ও শেখ আব্দুল আজিজ জানান, অনেক চেষ্টা তদবিরের পর বিদ্যালয়ের ভবনটি নির্মাণে সরকার বরাদ্দ দিয়েছে। এলাকাবাসী ভবন নির্মাণের জন্য জমিও দান করেছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে এলাকাবাসীর স্বপ্ন ভঙ্গ হতে চলেছে। এভাবে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ হতে দেওয়া হবে না।

বেমরতা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ জহিরুল ইসলাম মিঠু বলেন, 'কে বি ফতেপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের দাবি দির্ঘদিনের। বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়ের সহযোগিতায় চার তলা এই ভবনটির জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন পানির নিচে রড ফেলে রাখায় তা ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। রবিবার সকালে এক প্রকার অতিগোপনে নষ্ট রডের ওপরই ঢালাই কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এলাকাবসী এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি। তাই প্রতিবাদ করেছেন। পরে বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানালে তিনি কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।’

বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রতিভা সরকার জানান, কে বি ফতেপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চার তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের ২ কোটি ৮১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস কাজী এন্টারপ্রাইজকে ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল ১৮ মাস কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। রবিবার সকালে প্রতিষ্ঠানটি ভবন নির্মাণের জন্য ঢালাই কাজ শুরু করলে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করেন। এর ফলে কাজটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। ১৪ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর কতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'তা তো দেখাই যাচ্ছে।'

/আইএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বাংলাদেশ সফরের জিম্বাবুয়ে দলে কিংবদন্তির ছেলে
বাংলাদেশ সফরের জিম্বাবুয়ে দলে কিংবদন্তির ছেলে
রাফাহ শহরে আবারও অভিযান চালাবে  ইসরায়েল?
রাফাহ শহরে আবারও অভিযান চালাবে ইসরায়েল?
রাজনীতিক পঙ্কজ ভট্টাচার্যকে স্মরণ
রাজনীতিক পঙ্কজ ভট্টাচার্যকে স্মরণ
কক্সবাজার জেলার রোহিঙ্গা ভোটারদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
কক্সবাজার জেলার রোহিঙ্গা ভোটারদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
হংকং ও সিঙ্গাপুরে নিষিদ্ধ হলো ভারতের কয়েকটি মসলা
হংকং ও সিঙ্গাপুরে নিষিদ্ধ হলো ভারতের কয়েকটি মসলা