প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার দেওয়া নতুন বাড়িতে উঠলেন মহানুভব ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিন (৮২)। রবিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে তার হাতে নতুন ঘরের চাবি ও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নির্মিত দোকানের চাবি তুলে দেন শেরপুর জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব। এছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান এসএমএ ওয়ারেজ নাইমের পক্ষ থেকে তাকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উপহার দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিনকে সরকারের পক্ষ থেকে জমি দিয়ে তাতে বাড়ি করেও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নাজিম উদ্দিনকে যাতে আর কখনও ভিক্ষা করতে না হয় সেজন্য একটি দোকানও করে দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় হতদরিদ্র ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিনের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যে তার অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসাও করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার পেয়ে অত্যন্ত খুশি নাজিম উদ্দিন। ঘর পছন্দ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘খুশি লাগছে।’ এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আর কোনও কিছু চাই না। আমি দোয়া করি, আল্লাহ তারে (প্রধানমন্ত্রীকে) দীর্ঘদিন বাঁচায়ে রাখুক।’
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সামনে থেকে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুব দয়ালু মানুষ। তারে একটু দেখবার জন্য আমার মনটা কান্দে। ঘরবাড়ি পাইছি আমি। এহন তার (প্রধানমন্ত্রী) পা ছুঁয়ে সালাম করা আমার খুব ইচ্ছে। তারে দেখা পাইলে আমি তার পা ছুঁয়ে সালাম করবো।’
জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব বলেন, ‘আমরা সবাই আনন্দিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আমাদের মহানুভব ব্যক্তি নাজিম উদ্দিনের হাতে একটি পাকা বাড়ির চাবি তুলে দিলাম।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সামনে থেকে দেখার নাজিম উদ্দিনের ইচ্ছার বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এ বিষয়টা আমার জানা নেই। তিনি যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান, তাহলে আমরা সে বিষয়ে যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন–ঝিনাইগাতী উপজেলা চেয়ারম্যান এসএমএ ওয়ারেজ নাইম, ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জয়নাল আবেদীন, ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধিগাঁও গ্রামের মৃত ইয়ার উদ্দিনের ছেলে নাজিম উদ্দিন। গত ২১ এপ্রিল দুপুরে করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায়, কর্মহীন ঘরবন্দি থাকা মানুষের খাদ্য সহায়তা তহবিলে দীর্ঘদিনের সঞ্চিত ১০ হাজার টাকা দান করেন। তার ভাঙা ঘর ঠিক করার জন্য জমানো এই টাকা তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুবেল মাহমুদের হাতে তুলে দেন। এরপর থেকে সারাদেশে এ নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে। পরে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব কথা বলেন শেরপুরের জেলা ও ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এ সময় তিনি ওই দানবীর ভিক্ষুকের ঘর নির্মাণসহ সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার একাধিক বক্তব্যে নাজিম উদ্দিনের দানের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তার প্রশংসা করেন।
আরও খবর: ভিক্ষা করে জমানো টাকা দান করে দেওয়া নাজিমুদ্দিনকে নতুন ঘর দেবেন প্রধানমন্ত্রী