করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর বান্দরবানের সব পর্যটনকেন্দ্র ও হোটেল-মোটেলগুলো আজ শুক্রবার (২১আগস্ট) থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) সকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে করোনা ভাইরাস মনিটরিং কমিটির এক জরুরি বৈঠকে সিদ্ধান্তের পর গণবিজ্ঞপ্তির পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার কথা জানানা হয়। নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব পর্যটনকেন্দ্র ও হোটেল-মোটেল খোলার কথা বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওবার খবর পেয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকরা বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে চলে আসেন। পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে।
এদিকে প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে বান্দরবানের পর্যটন ব্যবসায়ীরা স্বাগত জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, করোনার কারণে পিছিয়ে পড়া এসব পর্যটনকেন্দ্রের ক্ষতি শিগগিরেই পুষিয়ে নিতে পারবেন তারা।
কয়েকজন হোটেল ম্যানেজার বলেন, এতদিন সব কিছু বন্ধ থাকায় তারা কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন তারা। এখন এগুলো খুলে দেওয়ায় তারা প্রশাসনের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করছেন, শিগগিরই পর্যটকবান্ধব এই শহরে তাদের ব্যবসা আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
জেলার হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে বান্দরবানে সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক হোটেল-মোটেল রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে গেছে। কর্মচারীদেরও ছাঁটাই করেছে অনেকে। তবে সংক্রমণ কমে আসায় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। আশা করছি পর্যটন শিল্পে আগের মতো ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন ব্যবসায়ীরা।’
বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শামীম হোসেন বলেন, ‘পর্যটন শিল্পনির্ভর প্রতিটি সেক্টরের জন্য আলাদা আলাদা শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এসব শর্ত সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই মেনে চলতে হবে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধিও মেনে চলতে হবে। অন্যথায় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
বান্দরবান ট্যুরিস্ট পুলিশের ওসি মো. আমিনুল হক বলেন, ‘দীর্ঘ পাঁচ মাস পর বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রগুলো শর্তসাপেক্ষে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হয়েছে। এসব পর্যটনকেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। আশা করছি পর্যটকরা নিরাপদে বেড়াতে পারবেন।’
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় চলতি সনের গত ২২ মার্চ থেকে জেলা লকডাউন করে বান্দরবানের সব পর্যটনকেন্দ্র এবং হোটেল-মোটেল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। পার্বত্য জেলা বান্দরবানে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ৬৩৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে চার জন।