প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদের (আইজিপি) দেওয়া দুইটি গরু উপহার পেলেন লালমনিরহাটে তেলের ঘানি টানা ছয়ফুল ইসলাম দম্পতি। বৃহস্পতিবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর এবং আইজিপি’র পক্ষে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার দুইটি ষাঁড় গরু ছয়ফুল ইসলামের হাতে তুলে দেন।
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জর উপজেলা কাকিনা ইউনিয়নের তেলিপাড়া এলাকার ছয়ফুল ইসলাম দম্পতি গরুর অভাবে নিজেরাই গত ছয় বছর ধরে ঘানি টেনে সরিষার তেল উৎপাদন করছিলেন। এই খবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসে। তিনি লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ছয়ফুল ইসলাম দম্পতির জন্য এক লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ষাঁড় উপহার পাঠান।
অপদিকে আইজিপি’র পাঠানো একটি ষাঁড় কালীগঞ্জের তেলিপাড়া এলাকায় গিয়ে ওই দম্পতির কাছে পৌঁছে দেন লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা ও কালীগঞ্জ থানার ওসি আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন। 
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাবেক সাংসদ অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম রুমী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট টিএমএ মমিন, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হাসান, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এনডিসি টিএম রাহসিন কবির।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, ‘গরুর অভাবে ঘানি টেনে সরিষার তেল উৎপাদন করছেন ছয়ফুল ইসলাম ও মোর্শেদা বেগম দম্পতি। জাতীয় দৈনিকে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসে। ছয়ফুল ইসলাম দম্পতির কষ্ট লাঘবের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরু উপহার পাঠান। আজ বৃহস্পতিবার তাকে সেই গরুটি হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় তাকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার খাদ্য সামগ্রীর দুটি বস্তাও দেওয়া হয়েছে।’
লালমমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা জানান, ‘পত্রিকার খবর পড়ে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ লালমনিরহাটের ছয়ফুল ইসলাম দম্পতির জন্য একটি ষাঁড় পাঠান। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সেই ষাঁড়টি নিয়ে গিয়ে ছয়ফুল ইসলাম দম্পতির হাতে তুলে দিয়েছি। আমরা আশা করি গরুর অভাবে ছয়ফুল ইসলাম দম্পতিকে আর তেলের ঘানি টানতে হবে না।’
ছয়ফুল ইসলাম এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাংবাদিক, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বসুন্ধরা গ্রুপসহ যারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাদের সবার জন্য আল্লাহর কাছে মঙ্গল কামনা করছি। যেন আল্লাহ তাদের দীর্ঘজীবী করেন এবং ভালো রাখেন। আমি কখনও ভাবতেই পারিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার জন্য গরু উপহার পাঠাবেন। এটি যেন স্বপ্নের মতো লাগছে।’
উল্লেখ্য, গত ৮ সেপ্টেম্বর ছয়ফুল ইসলাম দম্পতিকে নিয়ে খবর প্রকাশিত হয় কয়েকটি গণমাধ্যমে। বিষয়টি দেখে প্রথমে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের স্ত্রী আফরোজা বেগম একটি ষাঁড় গরু ও ঘর করার জন্য এক লাখ নগদ টাকা, পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ একটি ষাঁড় গরু ও সবশেষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে একটি ষাঁড় গরু দিলেন।
