দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গত অর্থবছরে (২০১৯-২০) দ্বিগুণ পরিমাণ পণ্য ভারতে রফতানি হয়েছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার আয়ও খানিকটা বেড়েছে। তবে রফতানি বাড়লেও পণ্যের সংখ্যা কমেছে। অবকাঠামোগত সমস্যা ও জটিলতা নিরসন হলে রফতানির পরিমাণ যেমন বাড়বে, তেমনি বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়বে বলে জানিয়েছেন রফতানিকারক ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বর্তমানে রাইস ব্রান্ড ওয়েল, ওয়াটার পাম্প, ঝুটকাপড় ভারতে রফতানি হচ্ছে, যদিও আগে চিটা গুড়, প্লাষ্টিকের ক্যারেট, সিমেন্ট ও সুতা রফতানি হতো। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৮৫টি বি/ই এর মাধ্যমে ২০ হাজার ২৪৬টন পণ্য রফতানি হয়েছে। যা থেকে আয় হয়েছে ১ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বন্দর দিয়ে ৯৫টি বি/ই এর মাধ্যমে ১০ হাজার ৩৯৪টন রাইস ব্রান্ড ওয়েল রফতানি করে ৮৫ লাখ ডলার আয় হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ হারুন ও সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট শাহিনুর রেজা শাহীন জানান, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর হিলি স্থলবন্দর। এই বন্দর দিয়ে দিন দিন আমদানির পরিমাণ বাড়লেও পণ্য রফতানির ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তা সম্ভব হচ্ছে না। কিছু কারণে আমরা ভারতে পণ্য রফতানি করতে পারছি না। যার কারণে মাত্র দু-একটি পণ্য ভারতে রফতানি করা সম্ভব হচ্ছে। এর কারণ হলো ভারতের হিলি কাস্টমসে সুপারের ওপরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নেই, উদ্ভিদ সংগনিরোধ অফিস নেই, কোনও শেড নেই, রাস্তাঘাটগুলো অপ্রশস্থ, এজন্য ভারতে ব্যাপক চাহিদা থাকলেও চাহিদামতো পণ্য রফতানি করতে পারছি না। এছাড়াও বন্দরসহ অবকাঠামোগত সুবিধা না থাকার কারণে রফতানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাকগুলো ভারতে গিয়ে সময়মত খালাস করা যায় না। এতে সময়মতো পণ্য ডেলিভারি করা যায় না। যার কারণে আগে বন্দর দিয়ে বেশ কিছু পণ্য রফতানি হলেও বর্তমানে পণ্য রফতানিকৃত পণ্যের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। বন্দর দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাঁচাপণ্য বিশেষ করে কাঁচামরিচ, আলু, বেগুন, কলা, সাজনাসহ বিভিন্ন সিজিনাল সবজি, তাঁতের শাড়ি কাপড়, সিমেন্ট, রড ইত্যাদি পণ্য ভারতে রফতানি হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলা হিলি কাস্টমস সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট আ্যসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান লিটন বলেন, ‘দেশে চাহিদা থাকায় আমরা হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি করি ১০০ টাকা বা তার বেশি মূল্যে অথচ আমাদের দেশে যখন পর্যাপ্ত কাঁচামরিচের উৎপাদন হয়, কাঁচামরিচ ৫/১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। সেসময় কিন্তু আমরা ভারতে কাঁচামরিচ রফতানি করতে পারি না। এছাড়া জয়পুরহাট, বগুড়া, মোকামতলায় প্রচুর পরিমাণে কলা ও সাজনার উৎপাদন হয়। ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে ভারতে তারপরেও ভারতে কিছু সমস্যার কারণে সেগুলো আমরা রফতানি করতে পারি না।’
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার আব্দুল হান্নান বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানির পাশাপাশি বেশ কিছু পণ্য ভারতে রফতানি হয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই এই পণ্যের রফতানি সন্তোষজনক হারে বাড়ছে, এভাবে রফতানি হলে বিগত অর্থবছরের তুলনায় অধিক পণ্য রফতানি করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে এই বন্দর দিয়ে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা বাড়ানো যায় তাহলে পণ্য রফতানির পরিমাণ যেমন বাড়বে তেমনি বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পরিমাণও বাড়বে।
