রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের স্টিয়ারিং কমিটির বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে সভা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক এম মজিবুর বরাবর চিঠি দিয়ে এ অভিযোগ তোলেন প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের ১২জন শিক্ষক।
অভিযোগকারী শিক্ষকরা হলেন- ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, ম্যানেজমেন্ট বিভাগে অধ্যাপক আলী রেজা, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মুজিবুল হক আজাদ খান, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শহিদুল আলম, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ইলিয়াস হোসাইন, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগেরর সভাপতি অধ্যাপক একরাম উল্যাহ, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শহীদ ইকবাল, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মামুনুর রশিদ তালুকদার, ম্যানেজমেন্ট বিভাগে শিক্ষক সোলাইমান চৌধুরী।
চিঠিতে তারা বলেন, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে নির্বাচনের মাধ্যমে দলীয় আহ্বায়ক ও স্টিয়ারিং কমিটির ২০ জন সদস্য নির্বাচিত হন। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ বছরের ৩০ জুন তাদের সবার মেয়াদ শেষ হয়েছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এরপর থেকে নিজ বিবেচনায় দলীয় কোনও কাজ করার এখতিয়ার স্টিয়ারিং কমিটি নাই। উক্ত তারিখের মধ্যে যেহেতু নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। সেক্ষেত্রে দলের সাধারণ সদস্যদের মতামত নেওয়া জরুরি ছিল। কিন্তু, এরপরও দলীয় বিধিবিধান না মেনে গত ২০ আগস্ট ও (১৫ সেপ্টেম্বর) স্টিয়ারিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্পূর্ণভাবে অবৈধ।
চিঠিতে তারা আহ্বায়ককে অভিযুক্ত করে বলেন, ‘গত ২০ আগস্ট মেয়াদোত্তীর্ণ স্টিয়ারিং কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ৩০ আগস্ট ইউজিসি কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও নিয়োগ-বাণিজ্যের অভিযোগ তদন্তে গণশুনানিকে অসঠিক গণ্য করে ইউজিসিকে পত্র দিয়েছেন। যেসব শিক্ষকেরা এসবের অভিযোগ করেছে, তাদের আপনি (আহ্বায়ক) প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের ‘কথিত’ সদস্য বলে অভিহিত করেছেন। অথচ আহ্বায়কের পদ চিরস্থায়ী না হলেও দলের নিবন্ধিত সদস্যদের পদ স্থায়ী। উপাচার্যের আজ্ঞাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগের সাফাই গাইতে গিয়ে আপনার নিজের মূর্খতা ও দুর্বৃত্তপনার চরম বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি একরাম উল্যাহ বলেন, ‘বর্তমান স্টিয়ারিং কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে দুই মাস আগে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এই অবস্থায় নতুন নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে অথবা সাধারণ সভার মাধ্যমে বর্তমান কমিটিকে দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু কমিটির সদস্যরা অনুমতি না নিয়ে উপাচার্যের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করছে যা প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের জন্য মানহানি কর। তাই আমরা দলীয় গঠনতন্ত্রের আলোকে দ্রুত সাধারণ সভার আয়োজনের দাবি জানিয়েছি।’
অভিযোগের বিষয়ে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক এম মজিবুর রহমানকে একাধিক ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের স্টিয়ারিং কমিটিতে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানপন্থীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।