জনবল সংকটের কারণে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের মৎস্য সম্প্রসারণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি বর্তমানে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। মাত্র একজন জনবল থাকায় দেখভালের অভাবে মৎস্য হ্যাচারির প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নষ্ট হচ্ছে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি মাস্টার রোলে লোক নিয়োগ করে মাছের পোনা উৎপাদন করে যাচ্ছেন তারা।
জানা যায়, স্বাধীনতার আগে ১৯৬১ সালে শায়েস্তাগঞ্জে মৎস্য সম্প্রসারণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি স্থাপিত হয়। বিগত সময়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন করে সাফল্য অর্জন করলেও এখন দেখভালের অভাবে ভালো নেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি। প্রায় তিন বছর ধরে কেন্দ্রটিতে পাঁচ জনের বদলে মাত্র একজন জনবল রয়েছে। কোনও ধরনের নিরাপত্তাকর্মী না থাকায় অরক্ষিত হয়ে পড়েছে মৎস্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি। ফলে দিন দিন কেন্দ্রটি ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
শায়েস্তাগঞ্জের কদমতলী গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া জানান, মৎস্য কেন্দ্রটি আমাদের এলাকার সুবিধার্থের জন্য দেওয়া হলেও এখন কোনও কাজে আসছে না। লোকবল না থাকায় এটি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। সব সময় গেট খোলা থাকে, এতে যে কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারছে। তিনি বলেন যে কোনও দিন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
একই গ্রামের রহমত আলী জানান, খামারটি বহুদিন আগের। খামারে মাত্র একজন লোক থাকার কারণে অনেক সময় স্থানীয়রা খামারের ভেতরে প্রবেশ করে মাছসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে যায়। এছাড়া মৎস্য খামারের ভেতরের বিভিন্ন যন্ত্রপাতিও নষ্ট হচ্ছে দেখভালের অভাবে, ভেঙে যাচ্ছে কেন্দ্রটির নিরাপত্তা প্রাচীরও।
শায়েস্তাগঞ্জের কুতুবের চক গ্রামের আব্দুল হক জানান, মৎস্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে একজন গার্ডও নাই। যে কারণে এটি বর্তমানে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। একজন কর্মকর্তা থাকে তিনি বাইরে গেলে মৎস্য কেন্দ্রটিতে ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এছাড়া অনেকেই কেন্দ্রটিতে মাস্টাররোলে কাজ পেলেও, বেতন সঠিকভাবে না পাওয়ায় কাজে থাকতে চান না।
শায়েস্তাগঞ্জ মৎস্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খামার কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন জানান, মৎস্য খামারে যে পরিমাণ লোকবল থাকার কথা তা নেই। মাত্র একজন অর্থাৎ আমি আছি। অতীতে দুই জন থাকলেও বর্তমানে আমি একাই মৎস্য খামারটি সামাল দিচ্ছি। এতে অনেক সময় খামারটি অরক্ষিত হয়ে পড়ে। যে কোনও মানুষ সহজেই এখানে প্রবেশ করতে পারে। তারপরও আমি মাস্টাররোলে লোক নিয়োগ করে মৎস্য উৎপাদনে আমাদের টার্গেট পূরণ করতে পারছি। তিনি জরুরি ভিত্তিতে একজন গার্ড নিয়োগের দাবি জানান।
হবিগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহাজাদা খসরু জানান, খামারে পাঁচ জন লোক থাকার কথা, তবে আছে মাত্র একজন। জনবলের অভাবে খামারের নিরাপত্তাসহ স্বাভাবিক কাজকর্ম বিঘ্নিত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন শিগগিরই জনবল নিয়োগ করা হবে।
মাস্টাররোলে লোক নিয়োগ দিয়ে খামারে উন্নতমানের রেনুপোনা উৎপাদনের কাজ স্বাভাবিক রাখা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।