অভ্যন্তরীণ সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করেছে ভারত সরকার। এমন অবস্থায় দেশের বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা মেটাতে ও মূল্য স্থিতিশীল রাখতে বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছেন আমদানিকারকরা। কিন্তু অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে আর ভারত পেঁয়াজ রফতানি চালু করলে লোকশানের আশঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক বাবলুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ভারত সরকার হঠাৎ করে কোনও আলোচনা ছাড়াই যদি পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়। পেঁয়াজতো পচনশীল পণ্য, এটাতো সংরক্ষণ করা সম্ভব না। ভারত সরকার এলসি নেবে আবার হঠাৎ করে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেবে এটাতো ব্যবসায়ীদের ক্ষতি। গতবছরের ঘা এখনও শুকায়নি। এমন অবস্থায় আমাদের সরকারের কাছে অনুরোধ যদি ভারত সরকার পেঁয়াজ না দেয়, তাহলে আমাদের সরকার যেন ঘোষণা দেয় আগামী তিন মাস ভারত থেকে কোনও পেঁয়াজ আসবে না। এতে দেশের যত পেঁয়াজ আমদানিকারক রয়েছেন প্রয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করবো। এখন আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করবো, আবার ভারত পেঁয়াজ রফতানি শুরু করলে আমরা বাড়তি দামে পেঁয়াজ এনে লোকশানের মুখে পড়বো। অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আসলে, ভারত থেকে পেঁয়াজ নেওয়া হবে না, এমন আশ্বাস পেলে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ আমদানি করবে।
তিনি আরও বলেন, আজ কাওরান বাজার থেকে শুরু করে শ্যামবাজারসহ দেশের বিভিন্ন মার্কেটে আমাদের কোটি টাকার মতো বাকি পড়ে আছে। আর কাঁচামালতো বাকি ছাড়া নগদ কিনে না। পেঁয়াজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে পার্টিগুলো টাকাও কেউ দিচ্ছে না। এদিকে ব্যাংকে বাড়ি-জায়গা মর্টগেজ দিয়ে এলসি করতে হয়। এখন যেসব এলসি খোলা রয়েছে সেগুলোর বিপরীতে পেঁয়াজ রফতানি না করলেও ব্যাংকে তার সুদ টানতে হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ভারত সরকার পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়। এতে দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ২৫০ পেঁয়াজবাহী ট্রাক আটকা পড়ে, একইসঙ্গে ১০ হাজার টনের এলসি দেওয়া থাকলেও সেটির কার্যক্রম স্থগিত। পরবর্তীতে অনুমতিক্রমে আগের টেন্ডার করা ১১টি ট্রাকে ২৪৬টন পেঁয়াজ গত ১৯ সেপ্টেম্বর রফতানি করে ভারত। তবে এর অধিকাংশ পেঁয়াজ পচা ও নষ্ট ছিল।