X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

২১ বছর পর রায়ে সন্তান জানলো পিতৃ পরিচয়, ধর্ষক বাবার ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড

মাদারীপুর প্রতিনিধি
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:০৩আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:০৯

জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মাদারীপুর

মাদারীপুরে দীর্ঘ ২১ বছর পর একটি ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৯৯ সাল থেকে স্বামী ও সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে ১৫ বছর বয়সী কিশোরী থাকাবস্থায় এ আইনি লড়াই শুরু করে অবশেষ ২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এসে বিচার পেলেন এক নারী। মাদারীপুরের জেলা ও দায়রা জজ নিতাই চন্দ্র সাহা এই রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে আসামি শামসুল হক হাওলাদারকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও বাদীপক্ষকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের আদেশ দেওয়া হয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, কালকিনি উপজেলার দক্ষিণ কানাইপুর গ্রামে প্রভাবশালী ব্যক্তি শামসুল হক হাওলাদার সেসময়ে দরিদ্র পরিবারের ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরীকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে। এতে ব্যর্থ হয়ে তাকে তুলে নিয়ে একটি নীল কাগজে ভুয়া বিয়ে রেজিস্ট্রির প্রতারণা করে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এতে ওই কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পড়লে শামসুল হক হাওলাদার তাকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করে। এদিকে ওই কিশোরী সন্তান জন্ম দেন। এরপর সন্তানের স্বীকৃতি ও প্রতারক শামসুল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ১৯৯৯ সালের ২৮ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরিবারটি দরিদ্র ও অসহায় হওয়ায় মামলা পরিচালনার দায়িত্ব নেয় মাদারীপুর লিগাল এইড অ্যাসোসিয়েশন।

আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতেও রিট করে। বিভিন্ন কৌশলে দীর্ঘদিন ধরে মামলাটি দীর্ঘসূত্রিতার চেষ্টা করে। প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে ও শারীরিক সম্পর্কে জন্ম নেওয়া ওই নারীর ছেলের বয়স এখন প্রায় ২০ বছর।

মাদারীপুরে আদালতে রায় ঘোষণা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী।

২০১৭ সালে আদালত ডিএনএ টেস্টের জন্য নির্দেশনা প্রদান করে আসামি শামসুল হক হাওলাদারকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ডিএনএ টেস্ট না করে সে পলাতক রয়েছে।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী লিগাল এইড অ্যাসোসিয়েশনের প্যানেল আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল হাসনাত, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম মিয়া ও অ্যাডভোকেট মুনির হাসান মিঠু জানান, ১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। মামলায় স্ত্রী হিসেবে ও জন্ম নেওয়া সন্তানের স্বীকৃতি এবং ভরণপোষণ বাবদ ক্ষতিপূরণ এবং আসামির বিচার দাবি করা হয়। তবে আসামি পলাতক থাকায় তার ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন করা যায়নি।

মাদারীপুর আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান সিং জানান, যেহেতু আসামি ডিএনএ টেস্ট না করে দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছে, সেহেতু আসামি শামসুল হক হাওলাদার যে দোষী তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। তবে স্বামী ও সন্তানের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে কিনা তা পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।

 

 

/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘নীরব এলাকা’, তবু হর্নের শব্দে টেকা দায়
‘নীরব এলাকা’, তবু হর্নের শব্দে টেকা দায়
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা