মানিকগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধে ব্যাপক ধস শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে শহর রক্ষা বাঁধের বোয়ালিয়া ও বড় সরুন্ডি এলাকায় ৫০ মিটার বাঁধ ধসে গেছে এবং এখনও তা অব্যাহত আছে। বাঁধের পাশের অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি যে কোনও সময় কালীগঙ্গা নদীর পেটে চলে যাবে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কালীগঙ্গা নদী থেকে বলগেট দিয়ে বালুমাটি আনলোড করায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর এবারের বন্যায় নদীতে পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতের কারণে বোয়ালিয়া ও বড় সরুন্ডি এলাকায় বাঁধের কয়েকটি স্থানে গত দুই দিনে প্রবল ধসের সৃষ্টি হয়। জরুরি ভিত্তিতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া হলে গুরুত্বপূর্ণ এই বাঁধের আশপাশের অংশও ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, জেলাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কালিগঙ্গা নদী ভাঙন রোধ এবং বন্যার কবল থেকে জেলা শহর রক্ষায় উদ্যোগ নেয় পাউবো। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯-১০ অর্থ বছরে প্রায় ৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে পৌরসভাধীন বেউথা থেকে বড় সরুন্ডি পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এলাকায় কালিগঙ্গা নদীর উত্তরপাড়ে সিসি ব্লক দিয়ে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে পাউবো। ২০১০ সালের শেষের দিকে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০১২ সালে এই বাঁধের কাজ সম্পন্ন হয়।
বুধবার বিকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, বোয়ালিয়া ও বড় সরুন্ডি এলাকায় কালিগঙ্গা নদীতে পানি বাড়ার কারণে নদীতে তীব্র স্রোত বইছে। বোয়ালিয়া এলাকায় দুটি স্থানে এবং বড় সরুন্ডি এলাকায় একটি স্থানে কালিগঙ্গা নদীর উত্তরপাড় ধসে সিসি ব্লকগুলো নদী বিলীন হয়ে গেছে। এতে ওই দুটি এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধের প্রায় ৫০ মিটার এলাকা ধসে গেছে। নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় বাঁধের ভেতরে থাকা গাছপালা কেটে নিয়ে গেছেন স্থানীয় লোকজন।
সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল লতিফ তোতা বলেন, 'আমরা নিজেরা টাকা–পয়সা দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করেছি। তবে নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না।'
এব্যাপারে মানিকগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিন বলেন, কালিগঙ্গা নদীর তীব্র স্রোতের কারণে বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এই ধস ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ধসে যাওয়া অংশগুলোতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হবে।'