X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

বেরোবি অধিকার সুরক্ষা পরিষদের স্মারকলিপি, দুর্নীতির অর্ধশতাধিক অভিযোগ

রংপুর প্রতিনিধি
২৬ নভেম্বর ২০২০, ২৩:১৫আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২০, ২৩:১৮

বেরোবি অধিকার সুরক্ষা পরিষদের স্মারকলিপি, দুর্নীতির অর্ধশতাধিক অভিযোগ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর বিরুদ্ধে অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অর্ধশতাধিক অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) অধিকার সুরক্ষা পরিষদের উদ্যোগে উপাচার্য বরাবর দেওয়া এক স্মারকলিপিতে এসব অভিযোগ করে ১৮ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়।

উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের লাগাতার অনুপস্থিতির কারণে উপাচার্যের পিএস আমিনুর রহমানের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় সুরক্ষা পরিষদের সদস্য ড. তুহিন ওয়াদুদ। এসময় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. গাজী মাজহারুল আনোয়ার, ড. তুহিন ওয়াদুদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ড. কমলেশ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান, নীল দলের সভাপতি ড. নিত্য ঘোষ, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফিরোজুল ইসলাম, কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি নুর আলমসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহবায়ক ও বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. মতিউর রহমান স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘উপাচার্য হিসেবে প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ যোগদানের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার এক নৈরাজ্যকর পরিবেশের মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, ডাবল শিফটের শিক্ষা পরিচালনা, বহুতল অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ, ড্রোন দ্বারা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা বিধান, দিবা-রাত্রি লাইব্রেরি পরিষেবা, বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় পরিষেবা সবই যে ছিল প্রতারণা তা বুঝে উঠে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। এর ওপর উপাচার্যের একের পর এক দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নজিরবিহীন অনুপস্থিতি, তথাকথিত বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের নামে মাসের পর মাস সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষ থেকে দূরে রাখা, ব্র্যান্ডিংয়ের নামে ড্রেসকোড চালুর অজুহাতে পোশাক বাণিজ্য, তথাকথিত পাবলিকেশনের নামে জার্নাল বাণিজ্য, বিগত উপাচার্য়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বিশেষ প্রকল্পে নিজের ভাগ্নে প্রকৌশলী মনজুর কাদেরকে পুশ-ইন করে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাবের হোসেন চৌধুরীকে ব্যবহার করে ড. ওয়াজেদ রিসার্স অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের লাখ লাখ টাকা তছরুপ করা এবং সব অন্যায়-অনিয়ম আড়াল করতে কতিপয় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিয়ে আত্মস্তুতিমূলক কলাম লেখনি আপনার শিক্ষক স্বত্বাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।’

স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, ‘শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি, আপগ্রেডেশন, স্থায়ীকরণ হাতিয়ার বানিয়ে অনেককে গোলামী করতে বাধ্য করা হয়েছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদীদের পদোন্নতি, জরুরি নথি আটকে রাখা এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেককে অযৌক্তিকভাবে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়অ হয়েছে। চাকরি থেকে বরখাস্তকরণ ইত্যাদি উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতার বৈশিষ্ট্য। উপাচার্যের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় আইন এখানে পদদলিত, তার অ্যাকাডেমিক দুর্নীতিতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা বঞ্চিত এবং প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা ও আপনার দায়িত্ব জ্ঞানহীনতায় বাংলাদেশ সরকারের সর্বস্তরের উন্নয়ন পরিকল্পনা হতে বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্তভাবে বঞ্চিত। শেখ হাসিনা হল ও ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিশেষ প্রকল্পের কাজ ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও তার পরিচালনায় পরিচালিত কাজের গতিহীনতায় হাজারো শিক্ষার্থী শিক্ষা সুবিধা বঞ্চিত হয়ে চলেছে। শুধু উপাচার্যের ফেসবুক প্রচারণার লক্ষ্যে সম্মান শ্রেণির শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডের মেয়াদ চার বছরের পরিবর্তে এক বছর করে শিক্ষার্থীদেরকে নানামুখী হয়রানির মধ্য দিয়ে সরকারের লাখ লাখ টাকা অপচয় করে চলেছেন।’

স্মারকলিপিতে আরও অভিযোগ করা হয়, ‘কর্মস্থলে উপাচার্যের ধারাবাহিক অনুপস্থিতিতে অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে এবং বিভিন্ন পরীক্ষা পরিচালনায় হয়রানিসহ নানাবিধ কৃত্রিম সংকটে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ, বিভাগ ও দফতরসমূহ পরিচালনা দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। সিনিয়রকে জুনিয়র আর জুনিয়রকে সিনিয়র বানানোর দায়িত্বজ্ঞানহীন অপতৎপরতায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট হতে চলেছে।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্মারকলিপি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, লজ্জার কথা কী বলবো, উপাচার্য আর রেজিস্ট্রার দিনের পর দিন মাসের পর মাস বছরের পর বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না। কালে-ভদ্রে আসলেও সকালে আসেন বিকালে চলে যান। আমরা বেশ কয়েকবার তার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু পাইনি। বাধ্য হয়ে তার পিএসকে স্মারকলিপি দিয়েছি। অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ এবং এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া না হলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
জাবির সিনেট ও সিন্ডিকেট প্রতিনিধি নির্বাচন: বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নিরঙ্কুশ জয়
জাবির সিনেট ও সিন্ডিকেট প্রতিনিধি নির্বাচন: বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নিরঙ্কুশ জয়
ঝুঁকি নিয়ে পজিশন বদলে সব আলো কেড়ে নিলেন রাফায়েল
ঝুঁকি নিয়ে পজিশন বদলে সব আলো কেড়ে নিলেন রাফায়েল
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক