X
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪
২৫ বৈশাখ ১৪৩১

নাটোরের ২০ স্থানে গণহত্যা চালিয়ে ২১ ডিসেম্বর হানাদারদের আত্মসমর্পণ

কামাল মৃধা, নাটোর
২১ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:০০আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:০০

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করলেও নাটোরে যুদ্ধ হয়েছিল। বিজয় অর্জনের পাঁচ দিন পর ২১ ডিসেম্বর নাটোরের উত্তরা গণভবনে মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে নাটোর মুক্ত হয়। নয় মাসে জেলার ২০টি স্থানে গণহত্যা চালিয়ে ওই দিন আত্মসমর্পণ করে হানাদার বাহিনী।

পাকিস্তানি বাহিনীর নাটোর ব্যারাক কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার নওয়াব আহমেদ আশরাফ ভারতীয় বাহিনীর আইসি ৪৫৫১ ব্রিগেডিয়ার রঘুবীর সিং পান্নুর কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় নাটোর ছিল পাকিস্তানি হানাদারদের ২ নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টার্স। এখান থেকেই দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের যুদ্ধ পরিচালনা করতো পাকিস্তানি বাহিনী।

১৬ ডিসেম্বর দেশের বিভিন্ন জেলা শত্রু মুক্ত হলেও ২১ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের আগ পর্যস্ত নাটোর ছিল পাক বাহিনীর দখলে। উত্তরা গণভবন ছাড়াও আনসার কোয়ার্টার, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজ, নাটোর রাজবাড়ি, পিটিআই, নাটোর মহারাজা জেএন উচ্চ বিদ্যালয়, ভোকেশনাল স্কুল, দিঘাপতিয়া কালিবাড়ি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ কার্যালয় ছিল পাকিস্তানি সেনাদের ঘাঁটি। হানাদার বাহিনী নাটোর সদর উপজেলার ফুলবাগান, ছাতনী, দত্তপাড়া, মোহনপুর, লালবাজার, কাপুড়িয়াপট্টি, শুকলপট্টি, মল্লিকহাটি, বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া ক্যাথলিক মিশন, গুরুদাসপুর উপজেলার নাড়িবাড়ি, সিংড়া উপজেলার হাতিয়ানদহ, কলম এবং লালপুর উপজেলার গোপালপুরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল চত্বরসহ ২০টি স্থানে গণহত্যা চালায়। 

১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর বগুড়া, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, ঈশ্বরদী, নবাবগঞ্জ প্রভৃতি স্থান থেকে পাকিস্তানি সেনারা নাটোরের পিটিআই স্কুল, আনসার হল, রিক্রিয়েশন ক্লাব, এনএস সরকারি কলেজ, নাটোর রাজবাড়ি ও দিঘাপতিয়া উত্তরা গণভবনে 
(তৎকালীন গভর্নর হাউস) আশ্রয় নেয়।

২১ ডিসেম্বর উত্তরা গণভবন চত্বরে পাকিস্তানি বাহিনীর নাটোর ব্যারাক কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার নওয়াব আহমেদ আশরাফ ভারতীয় বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার রঘুবীর সিং পান্নুর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় হানাদার বাহিনীর ১৫১ জন অফিসার, ১৯৮ জন জেসিও, ৫৫০০ জন সৈনিক, ১৮৫৬ জন আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য তাদের ৯টি ট্যাংক, ২৫টি কামান ও ১০ হাজার ৭৭৩টি ছোট অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে।

নাটোরের মুক্তিযোদ্ধা বীর প্রতীক সোলায়মান আলী বলেন, পাকিস্তানি বাহিনী নাটোরের যেসব স্থানে গণহত্যা চালিয়েছিল; তার কিছু স্থানে গণকবর ও শহীদ মিনার নির্মিত হলেও যথোপযুক্ত তত্ত্বাবধান নেই। বর্তমান সদর উপজেলা পরিষদের (মুক্তিযুদ্ধকালীন মিলিটারি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স) ভেতরের শিমুলতলায় এখনও কোনও স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়নি। তালিকা হয়নি গণকবরে শায়িত শহীদদের, সংরক্ষিত হয়নি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি যা সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরের পরিত্যক্ত ভবন সংস্কার করে করা যায়, সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা হয়নি নাটোরের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস। শুধু বিশেষ দিন পালন ও শহীদদের স্মরণের মধ্যেই কর্মসূচি সীমাবদ্ধ রাখলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই ইতিহাস ভুলে যাবে। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের বাস্তবমুখী কাজ করার আহ্বান জানান বীর প্রতীক সোলায়মান আলী।

/এএম/
সম্পর্কিত
রাষ্ট্রপতি পেলেন ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ লেখা স্মার্ট এনআইডি
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সফলতায় কিছুটা দায়মুক্ত হয়েছি: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী
উপজেলা নির্বাচনে পলকের হস্তক্ষেপ ঠেকাতে হাইকোর্টে রিট
সর্বশেষ খবর
ফ্রিজের আয়ু বাড়বে এই ৫ টিপস মানলে
ফ্রিজের আয়ু বাড়বে এই ৫ টিপস মানলে
ঢাকা পৌঁছেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
ঢাকা পৌঁছেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
হেড-অভিষেক ঝড়ে লণ্ডভণ্ড লখনউ, বিদায় মুম্বাইয়ের
হেড-অভিষেক ঝড়ে লণ্ডভণ্ড লখনউ, বিদায় মুম্বাইয়ের
জিম্মি মুক্তি ও রাফাহতে অভিযান নিয়ে বিভক্ত ইসরায়েলিরা
ঝুঁকি নিচ্ছেন নেতানিয়াহুজিম্মি মুক্তি ও রাফাহতে অভিযান নিয়ে বিভক্ত ইসরায়েলিরা
সর্বাধিক পঠিত
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন বন্ধের বিষয়ে যা বলছে বিটিআরসি
অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন বন্ধের বিষয়ে যা বলছে বিটিআরসি