দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর, বাড়ি ও খড়ের গাদায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার মালগ্রাম পানুয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, রাত দেড়টার দিকে ওই এলাকার একটি কালী মন্দিরে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করে কালী প্রতিমা ও আরেকটি প্রতিমার মাথা কেটে পাশের একটি পুকুরে ফেলে দেয়। এ সময় দুর্বৃত্তরা ওই এলাকার একটি বাড়ির চালায় ও তিনটি খড়ের গাদায় অগ্নিসংযোগ করে। পরে এলাকাবাসী বিষয়টি টের পেয়ে আগুন নেভায়। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকাবাসী এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচারের দাবি জানিয়েছে।
এদিকে, ঘটনার পর রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। আজ রবিবার সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, কাহারোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসলাম মোল্লা, বীরগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সুজন সরকার, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি গোপেশ চন্দ্র প্রমুখ এলাকা পরিদর্শন করেন। পুলিশ এ ঘটনার বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি গোপেশ চন্দ্র জানান, কালী মন্দিরের মূর্তি ভাঙচুর এবং বাড়িতে ও খড়ের গাদায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এলাকার মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
তিনি আরও জানান,প্রতিনিয়ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনায় এখন এসব মানুষ নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল ঘটনাটি ‘পরিকল্পিত’ ছিল উল্লেখ করে বলেন, ‘ধর্মকে যারা পুঁজি করে, তারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এর আগেও যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছিল তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।’
কাহারোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসলাম মোল্লা জানান, রাতের অন্ধকারে ঘটনা ঘটায় এখন পর্যন্ত কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক বরাদ্দ দেওয়া হবে।
এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বীরগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সুজন সরকার জানান, ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশী ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তের পর বিষয়টি ভালোভাবে জানা যাবে।’
/এমডিপি/এএআর /
