X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

কুড়িগ্রামে বন্যা দুর্গত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে পানিবাহিত রোগ

আরিফুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম
২১ জুলাই ২০১৯, ১২:৫৫আপডেট : ২১ জুলাই ২০১৯, ১৩:৪৭

নৌকায় বসবাস করায় পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে লোকজন ‘চাইর পাকে (পাশে) পানি, খাওয়া-দাওয়ার কষ্ট। ইয়ার মধ্যে ছাওয়াটার তিন দিন থাকি পাতলা পায়খানা। খালি স্যালাইন খোয়য়া থুইছি। পানিত ডাক্তারও ডাকপার পাই না, চিকিৎসা করি কেমন করি।’ আড়াই বছরের সন্তান মোস্তফার অসুস্থতার মধ্যে নিজের অসহায়ত্ব এভাবেই প্রকাশ করলেন সদর উপজেলার মোঘলবাসা ইউনিয়নের নামারচর গ্রামের মুন্নি আক্তার। শুধু মুন্নি না, কুড়িগ্রামে পানিবন্দি ৮৯৪ গ্রামের অনেক বাড়িতেই এখন পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও চিকিৎসক সংকটেও ভুগছেন তারা। যদিও কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. আমিনুল ইসলামের দাবি, জেলায় ৮৫টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে এবং কোথাও কোনও চিকিৎসা সংকট নেই।

একই অভিযোগ নামারচরের নেজাম উদ্দিনের। তিনি বলেন, তার দেড় বছরের নাতি শামীম চার দিন ধরে ডায়রিয়ায় ভুগছে। বাড়ির পাশের একটি দোকান থেকে  স্যালাইন কিনে এনে খাওয়াচ্ছেন। আর কোনও চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়নি। ছেলে ঢাকায় কাজ করায় নাতিকে নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি।

নাতিকে কমিউনিটি ক্লিনিকে নেননি কেন—জানতে চাইলে নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘বানের পানিত কমিউনিটি ক্লিনিকও তলাইছে। ডাক্তারও আইসে না, কোটাই (কোথায়) চিকিৎসা করামো।’ তার নাতির মতো গ্রামের অনেক শিশু এখন ডায়রিয়াসহ সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত। কিন্তু তারা কোনও চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না, অভিযোগ করেছেন নেজাম উদ্দিন।

একই গ্রামের ছালেহা জানান, তার পাঁচ বছরের ছেলে কাশি-জ্বরে আক্রান্ত। তার নিজের হাত ও পায়ে চর্ম রোগ দেখা দিয়েছে। বন্যার পানিতে ভিজে ভিজে এ অবস্থা হয়েছে। চারপাশে পানি থাকায় কোনও হাসপাতালে যেতে পারেননি তিনি।

একই চিত্র দেখা গেছে চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুর, উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মশালের চর ও বালার চর এবং বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে। সেখানে শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়রিয়া এবং সর্দি-জ্বরসহ পানিবাহিত রোগে।

নৌকায় বসবাস করায় পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে লোকজন

জেলার নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলেও পানিবন্দি মানুষের ভোগান্তি বাড়তে শুরু করেছে। তবে এ অবস্থাকে এখনও স্বাভাবিক বলছেন চিকিৎসকরা।

চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মোস্তারি বেগম বলেন, সর্দি, কাশি ও হাত-পায়ে চুলকানি নিয়ে রোগীরা আসছেন। তবে এটা এখনও স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। পানি নেমে গেলে এর প্রকোপ আরও বাড়বে।

ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী আসছেন কিনা—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খাদ্যে বিষক্রিয়া ও নোংরা পানির কারণে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী আসছে। কিন্তু রোগীর সংখ্যা এখনও স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে।’

এদিকে, জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৮৫টি মেডিক্যাল টিম থাকলেও টিমে ডাক্তার আছেন মাত্র ৩৫ জন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘চিকিৎসক সংকট থাকায় একজন এমবিবিএস ডাক্তারের অধীন একাধিক মেডিক্যাল টিম দেওয়া হয়েছে।’ 

/এসটি/এমএমজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করছেন, ব্যতিক্রম থাকতেই পারে
মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানসাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করছেন, ব্যতিক্রম থাকতেই পারে
জন্ম আর মৃত্যুর সুরেলা মেলবন্ধনের প্রতিধ্বনি
৩৫তম জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসবজন্ম আর মৃত্যুর সুরেলা মেলবন্ধনের প্রতিধ্বনি
দারুণ সেঞ্চুরিতেও রাব্বির কাছে ম্লান সাকিব
দারুণ সেঞ্চুরিতেও রাব্বির কাছে ম্লান সাকিব
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা: স্টেশন মাস্টারসহ ৩ জন বরখাস্ত
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা: স্টেশন মাস্টারসহ ৩ জন বরখাস্ত
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ