ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনাজপুরে সনাতন ধর্মালম্বীরাদের শতবর্ষের উৎসব গোষ্ট মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। শ্রী কৃষ্ণ ও রাধার আরাধনায় ৩৫০ বছর ধরে চলে আসা দিনব্যাপী এই মেলা কলেছিল রবিবার (২২ নভেম্বর) সকালে। তবে করোনার কারণে এবারে লোকসমাগম কম হয়েছে।
দিনাজপুরের রাজবাটীর কালিয়াজিউ মন্দির থেকে রাধা-কৃষ্ণের মূর্তি রবিবার সকালে আনন্দসাগর এলাকায় শ্রী শ্রী গোষ্টধাম শিব মন্দিরের পাশে নিয়ে আসা হয়। সেখানে আলাদা করে রাধা-কৃষ্ণ রেখে বাদ্য বাজনা নিয়ে পূজা ও ভক্তদেরকে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
পূজা উপলক্ষে বসে দিনব্যাপী মেলা। পূজা ও মেলা দেখতে দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধর্মপ্রাণ সনাতনীরা আসেন এখানে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের মতে, দিনটি বিশেষ, কারণ এই দিনটিতে সবার মঙ্গল কামনা করেছেন তারা। প্রায় সাড়ে ৩০০ বছর ধরে এই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। নগ্ন পদব্রজে আনন্দসাগর এলাকায় শ্রী শ্রী গোষ্টধাম শিব মন্দিরে আসা ভক্ত ও পূণ্যার্থীরা জানান, প্রচলিত আছে গোষ্ট অষ্টমীর দিনে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ কালিয়া নাগকে দমন করেছিল। এছাড়াও আর্শ্বিন-কার্তিক মাসে অভাবের কারণে এই অঞ্চলের মানুষ বলে থাকেন গোষ্ঠ গেলে কষ্ট শেষ হয়ে যায়। কারণ কার্তিক মাসে নতুন ধান গোলায় ওঠে আর অভাবের দিন শেষ হয়।
দিনাজপুর রাজদেবোত্তর অ্যাস্টেটের সদস্য উত্তম কুমার রায় বলেন, রাজা-মহারাজার আমল থেকে এই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। সকালে রাজবাড়ী মন্দির থেকে নগ্ন পদব্রজে রাধা-কৃষ্ণের মূর্তি আনন্দসাগরে নিয়ে আসা হয়। সেখানে পূজা ও লীলা শেষে আবার বিকালে মূর্তি রাজবাড়ী মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যে দিনব্যাপী চলে পূজা-অর্চনা, প্রসাদ বিতরণ। তবে এবারে করোনার কারণে অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। এবারে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও মা রাধারানীর কাছে প্রার্থনা এই যে, দ্রুতই যেন পৃথিবী থেকে করোনা ধুয়ে-মুছে চলে যায়। আগে যেভাবে জাকজমকভাবে এই আয়োজন হতো আগামীতেও যেন সেভাবে আয়োজন হয়।