কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বালু লুটকারীদের আটকে জিনিসপত্র রেখে দিয়েছে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে এলাকাবাসীকে সাধুবাদ দিতে গেলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) দুপুরে উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের দামাল গ্রামের দুধকুমার নদের তীরে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, দুধকুমার নদ ড্রেজিং করে পাড়ে বালু স্তূপ করে রাখে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। ওই বালুতে চোখ পড়ে স্থানীয় লুটেরাদের। ট্রাক্টর দিয়ে বালু লুটের চেষ্টা করে বারবার। এলাকাবাসীর প্রতিরোধে ব্যর্থ হয় সংঘবদ্ধ লুটেরার দল। দুপুরে ট্রাক্টর ও ভেকু মেশিন নিয়ে বালু আনতে গেলে আবারও এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে পড়ে। খবর ঘটনাস্থলে ছুটে যান নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এলাকাবাসীর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বালু পরিবহনের গাড়ি ও ভেকু মেশিন আটকে রাখেন ইউএনও।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং নাব্যতা সংকট দূর করতে সরকারি উদ্যোগে দুধকুমার নদের কিছু অংশে ড্রেজিং চলছে। ড্রেজিংয়ের বালু নদের তীরে স্তূপ করে রাখা হয়। এসব বালু বিক্রির জন্য লুটের চেষ্টা করে স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীরা। পরে এলাকাবাসীর বাধার মুখে পালাতে বাধ্য হয় তারা।
এ ঘটনায় রিয়াজ উদ্দিন, রহমত আলী ও সুমন মিয়াসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। রায়গঞ্জ ইউনিয়নের ভূমি অফিসের তহশিলদার ছয়ফুর রহমান এ অভিযোগ দিয়েছেন।
রায়গঞ্জ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দামাল গ্রামের তরুণ মামুন অর রশীদ বলেন, আমরা দিনে-রাতে পাহারা দিয়ে এসব বালু রক্ষার চেষ্টা করে আসছি। বালুগুলো জনগণের সম্পদ। এগুলো বিক্রি করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে টাকা জমা দেওয়া হোক- এটাই আমাদের চাওয়া।
এলাকাবাসীর এমন প্রতিরোধকে সাধুবাদ দিয়ে নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর আহমেদ মাসুম বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় সম্পদরক্ষায় এলাকাবাসীর এমন প্রতিরোধ; সত্যিই প্রশংসনীয়। বালু লুটের চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। আশা করছি, ওই স্থানে আর কেউ বালু লুটের জন্য যাওয়ার সাহস দেখাবে না।’
ইউএনও আরও বলেন, ‘ওই স্থানে প্রায় কোটি টাকার বালু রয়েছে। আমরা বালুগুলো নিলামের ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু কেউ নিলামে অংশ নেননি। এ ব্যাপারে জেলা কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। বালুর বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা চলছে। প্রয়োজনে ওই এলাকার ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ভরাট ও ব্লক তৈরিতে স্তূপ করা বালু ব্যবহার করা হবে।’