১৯৭১ সালের গণহত্যার সংখ্যা নিয়ে যারা সংশয় প্রকাশ করে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীরা মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ ছোট করতে চায়, বাঙালির অর্জনকে অস্বীকার করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সঠিকভাবে সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুলনা, রাজশাহী, পঞ্চগড়, দিনাজপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে হারিয়ে যাওয়া বধ্যভূমি ও নির্যাতনকেন্দ্রগুলো চিহ্নিত করে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের আর্কাইভ ও জাদুঘরে প্রায় ১০ হাজার ছবি আছে। জরাজীর্ণ জাদুঘর থেকে উন্নত ভবন হচ্ছে।’
দীপু মনি বলেন, ‘গণহত্যা জাদুঘরের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে অন্যতম হলো গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের ‘পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিং (পিজিটি)’ কোর্সের ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক তৈরি হয়। ফলে আগামী দিনের শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে। এখন শিক্ষাব্যবস্থা শ্রেণিকক্ষের চার দেয়ালে বন্দি থাকবে না। শিক্ষাব্যবস্থাকে চতুর্থমুখী জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ইতিহাসভিত্তিক করা হয়েছে।’
রবিবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দিনাজপুরে গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ শীর্ষক নবম পিজিটি কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের সহায়তায় মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃত মন্ত্রণালয়ের গবেষণা প্রকল্পের অধীনে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা গণহত্যা জাদুঘরের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নবম পিজিটি কোর্সের পরিচালক অধ্যক্ষ মোজাম্মেল বিশ্বাস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবোর্ডের সচিব জহির উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘দেশের সঠিক ইতিহাস ও বাংলা ভাষা এবং সঠিক বানানের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আজ পিজিটি কোর্সের মাধ্যমে যারা গবেষণা কার্যক্রম সম্পর্কে শিক্ষা নিলেন তারা অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণে কাজ করবেন। মুক্তিযুদ্ধ এখনও প্রাসঙ্গিক বিষয়। কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীরা এখনও রয়েছে। ফলে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। ভবিষ্যতে তৃণমূল পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের গবেষকরা সঠিক ইতিহাস তুলে ধরবেন।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের সহায়তায় নবম পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিং (পিজিটি) কোর্সে এবার ১০০ জন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে যারা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণার থিসিস জমা দিয়েছেন তাদের সনদপত্র দেওয়া হয়েছে।
