ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাশ এক বছরের জন্য জামিন পেয়েছেন। জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে জামিন দেন। জামিন পাওয়ায় খুশি ঝুমনের পরিবার।
ঝুমন দাশের স্ত্রী সুইটি রাণী দাশ বলেন, ‘আদালত জামিন দেওয়ায় আমরা খুশি। তবে নিঃশর্ত মুক্তি চেয়েছিলাম। আদালত তাকে শর্তযুক্ত জামিন দিয়েছেন।’
বড় ভাই নূপুর দাশ বলেন, ‘এব বছরের মধ্যে দেশের বাইরে যাওয়া যাবে না শর্তে ঝুমনকে জামিন দিয়েছেন আদালত। তারপর জামিন হওয়ায় আমরা খুশি।’
ঝুমন দাশের মা নিভা রাণী দাশ বলেন, ‘দীর্ঘ কারাভোগের পর আমার ছেলের জামিন হয়েছে। সে এখন আদালতের কাছে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করে।’
সুনামগঞ্জে ঝুমন দাশের মামলা পরিচালনাকারী নিম্ন আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী দেবাংশু শেখর দাস বলেন, ঝুমন দাশ এখন সুনামগঞ্জে কারাগারে আছেন। তার জামিন সংক্রান্ত কাগজপত্র আসতে ৪-৫ দিন সময় লাগবে। এসব কাগজ হাতে পওয়ার পর সুনামগঞ্জ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এটা একটু সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। এরপর তিনি কারামুক্ত হবেন।
দেশ না ছাড়ার শর্তে ঝুমন দাশের জামিন
গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে হেফাজতে ইসলাম শানে রিসালাত নামে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেখানে হেফাজত নেতা মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকের ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ঝুমন দাশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই স্ট্যাটাস হেফাজতের দৃষ্টিতে আপত্তিকর মনে হওয়ায় এর প্রতিবাদে সমাবেশ হয়। এর জেরে শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
পরে ১৬ মার্চ রাতে ঝুমন দাশকে আটক করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে শাল্লা থানায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল করিম ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। এরপর সেই মামলায় গত ৩ আগস্ট নিম্ন আদালতে তার জামিন আবেদন খারিজ করেন আদালত। এরই প্রেক্ষিতে জামিন চেয়ে গত ২২ আগস্ট হাইকোর্টে আবেদন করেন ঝুমন দাশ।