X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবির শতবর্ষ উদযাপনের সাজে আরও কিছুর প্রত্যাশা ছিল শিক্ষার্থীদের

আবিদ হাসান
০৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬:৫০আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:৫৯

দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। ১৯২১ সালে ১ জুলাই যাত্রা শুরু করে দেশের সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠ। চলতি বছর প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পূরণ করে পদার্পণ করে ১০১তম বছরে। গত ১ জুলাই থেকে জাঁকজমক পরিবেশে শতবর্ষ উদযাপন করার কথা থাকলেও মহামারি করোনার কথা বিবেচনা করে তা পিছিয়ে ১ ডিসেম্বর থেকে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ উপলক্ষে নানা রঙে-ঢঙে সেজেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। তবে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতারা বলছেন, এই সাজ আরও জমকালো হতে পারতো। আর আয়োজকরা বলছেন, করোনার মধ্যে এটাই বেস্ট।

সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল, কলা ভবন, ভিসি চত্বর, স্মৃতি চিরন্তন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ভবন, ক্যাম্পাস ও ফুলার রোডসহ আশপাশের বিভিন্ন সড়ক লাল, সবুজ, নীল রঙের বাতির আলোয় সাজানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা, টিএসসির বটতলা, মধুর ক্যান্টিনের আম গাছ, ভিসি চত্বরের কড়ই গাছসহ বিভিন্ন স্পটে ‘শতবর্ষের আলোয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে লাগানো হয়েছে লাইটবক্স, লাগানো হয়েছে বিভিন্ন ধরনের পোস্টার, প্ল্যাকার্ড।

ছেলেদের ১৮টি হলের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও বিজয় একাত্তর হল মনোরমভাবে সাজানো হলেও বাকি হলগুলো সাজানো হয়েছে দায়সারাভাবে। মেয়েদের হলগুলোতে কয়েক গজ মরিচ বাতি ছাড়া আর কোনও সাজ নেই।

সাজানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার নাফিস বলেন, ‘সাজসজ্জা আরও ভালো হতে পারতো এবং হওয়া উচিত ছিল। কারণ, আমরা স্বাধীনতা দিবসেও দেখেছি টিএসসি, বিজনেস ফ্যাকাল্টিসহ সব ইনস্টিটিউট বর্ণিল সাজে সজ্জিত হয়েছে। কিন্তু শতবর্ষের অনুষ্ঠানে এসে কলা ভবন, কার্জন হল আর ভিসির ভবন ছাড়া বাকি অংশ নিতান্তই গতানুগতিক উপায়ে সাজানো হয়েছে।’

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘শতবর্ষের অনুষ্ঠানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক গুণী শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করে আরও প্রাণবন্ত ও প্রাঞ্জল করা যেত। এই শতবর্ষকে ঘিরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনেক আশা আকাঙ্ক্ষা ছিল, সেই জায়গা থেকে আমরা শতবর্ষের অনুষ্ঠানকে ঘিরে হতাশ। আর এই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আমরা লক্ষ করেছি। আলোচনা সভায় বিশ্ববরেণ্য স্কলারদের এনে আরও প্রাণবন্ত করতে পারতো। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠানের প্যান্ডেলে দেখা গেছে অর্ধেক খালি। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অনুষ্ঠানকে ব্যর্থতা হিসেবে দেখবো।’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী), ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের যে আয়োজন, তার সঙ্গে শিক্ষার্থীরা তাদের সংযুক্তি অনুধাবন করেনি। তারা পুরো আয়োজনের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা অনুভব করছে। শতবর্ষ উপলক্ষে যে বিষয়গুলো সামনে রাখা দরকার ছিল, যেমন: আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার পরিস্থিতি, শিক্ষার্থীদের সমস্যা, এখানকার গবেষণার মান ইত্যাদি। এগুলো সেভাবে গুরুত্বে উঠে আসেনি।’ 

সাজানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের কাছে দায়িত্ব দিলে তারা নান্দনিকভাবে ক্যাম্পাস সাজাতে পারতো। কার্জন হলটা মরিচ বাতি দিয়ে যেভাবে সাজানো হয়েছে, তা আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের সঙ্গে যায় না। সার্বিকভাবে অনুষ্ঠানের মধ্যে অন্যের আজ্ঞাবহতা প্রকাশ পেয়েছে। শতবর্ষের যে অনুষ্ঠান সবার হয়ে ওঠার কথা তা হতে পারেনি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের অনুষ্ঠান চলছে। এটা আরও আগে উদ্বোধন হয়েছে, এখন মূল পর্ব হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি আবেগের জায়গা। বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার বাতিঘর। সেদিক থেকে এটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একটি ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী। অনুষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংশ্লেষণ আরও ভালো করার সুযোগ থাকতে পারতো।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান যেমনি হোক না কেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের। বিভিন্ন সময়ে ইতিবাচক ও নেতিবাচক ঘটনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় শিরোনাম হয়। তারপরও লাখো তরুণের স্বপ্নের নাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। শতবর্ষ আমরা মনের মাধুরি মিশিয়ে অনুধাবন করছি। সবাই দায়িত্বশীল থেকে, নিজ জায়গা থেকে শতবর্ষ উদযাপন করছে। আমাদের মনে চিরফাগুনের আস্তরণ পড়েছে।’

জানতে চাইলে অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের চেয়ারম্যান শেখ আফজাল হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সাজসজ্জা আরও সুন্দর হয়তো হতে পারতো, কিন্তু করোনা মহামারির মধ্যে এটাই বেস্ট।’

/আইএ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
বুধবার থেকে ঢাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা সশরীরে
মার্কিন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সমর্থনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংহতি সমাবেশ
লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুলে ছুঁয়ে যায় তপ্ত হৃদয়
সর্বশেষ খবর
প্রথম ধাপে ৭ শতাংশ কোটিপতি প্রার্থী
উপজেলা নির্বাচনপ্রথম ধাপে ৭ শতাংশ কোটিপতি প্রার্থী
আপাতত মেনশন নয়, আপিল বিভাগে সিরিয়াল অনুযায়ী চলবে মামলার শুনানি
আপাতত মেনশন নয়, আপিল বিভাগে সিরিয়াল অনুযায়ী চলবে মামলার শুনানি
ধূসর ছবির ঝকঝকে প্রিন্ট!
ধূসর ছবির ঝকঝকে প্রিন্ট!
এবার যুক্তরাষ্ট্রের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
এবার যুক্তরাষ্ট্রের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
সর্বাধিক পঠিত
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?