পুরান ঢাকার কোতোয়ালি থানার নয়াবাজারের পাশে সংকীর্ণ এক গলি। সেখানে দেখা গেলো জিন্দাবাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড। ভিত্তিপ্রস্তরও আছে। তবে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে কেবল নেই আর নেই।
তিন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য একটি মাত্র শ্রেণিকক্ষ। সবাই একসঙ্গে হাজির হলে দাঁড়ানোর জায়গাও হয় না। সেখানে মাঠ ও পাঠাগারের আশা করা আদিখ্যেতা বটে! অফিসের কাজ চলে ছোট একটি কক্ষে। পাওয়া গেলো না টয়লেটও।
এ যুগে এমন জীর্ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অপ্রত্যাশিত বটে। অবাক করা বিষয় হলো, গত ২০ বছর ধরে স্কুলটি চালুই আছে।
খাতা-কলমে স্কুলটিতে পড়ছে ৭৭ জন। তবে সবার দাঁড়ানোর জায়গাও হবে না এখানে। মাঝে মাঝে ক্লাসের ভেতরেই করানো হয় অ্যাসেম্বলি।
এসব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেও ফল পায়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাই এভাবেই চলছে কার্যক্রম।
স্কুলটির পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র রাসেল বললো, আমরা স্কুলে এসে শুধু ক্লাসে বসে থাকি। মাঝে মাঝে ঠিকমতো বসতেও পারি না।
আরও জানা গেলো, মাঝে মাঝে এক রুমে একসঙ্গেই বসতে হয় ভিন্ন ভিন্ন ক্লাসের শিক্ষার্থীদের।
চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শারমিন আক্তার বলেন, স্কুলে মাঠ ও জায়গা না থাকায় ছেলেমেয়েরা বাসায় বসে গেমস খেলে। এভাবে ছেলেমেয়েরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে। তাদেরও বাধা দেবো কী করে। তাদের তো খেলাধুলার জায়গা নেই। সরকারের কাছে তাই আমাদের আবেদন, স্কুলটির যেন সংস্কার করা হয়। শিক্ষার্থীরা যেন একটু খেলার জায়গা পায়।
জিন্দাবাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিল্পী আক্তার জানান, গত ২০ বছর ধরে স্কুলটির এ অবস্থা। কর্তৃপক্ষকে বার বার জানিয়েও সমাধান হয়নি। খুব খারাপ লাগে যখন শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো ক্লাসে বসতেই পারে না। শিক্ষকদেরও বসার জায়গা নেই।
ঢাকা জেলা শিক্ষা অফিসার আলেয়া ফেরদৌসী শিখা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাজধানীর সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকার দৃষ্টিনন্দন করছে। ইতোমধ্যে তিনটি বিদ্যালয়ের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়নসহ সব বিদ্যালয়কে দৃষ্টি নন্দন করা হবে পর্যায়ক্রমে। যেসব বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত জায়গা নেই, সেসব বিদ্যালয়ের জন্য সরকার প্রয়োজনে বিশেষ ব্যবস্থা নেবে।’