মূল্যায়নের আগেই ষান্মাসিক ‘মূল্যায়ন নির্দেশনা’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় গুজব তৈরি হয়েছে। মূল্যায়ন নির্দেশনা ছড়িয়ে দেওয়া প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) নির্দেশনা দিয়েছে।
বুধবার (৩ জুলাই) এনসিটিবি থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকদের ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠানো হয়।
এনসিবির চিঠির আলোকে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) অধিদফতরগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সর্তক করে দিয়ে বলেছে যেসব প্রতিষ্ঠান প্রধান এই কাজ করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এনসিটিবির চিঠির জরুরি নির্দেশনায় জানানো হয়, মূল্যায়ন নির্দেশনাগুলো কোনও শিক্ষার্থী আগে থেকে জেনে গেলেও সামগ্রিক মূল্যায়ন কার্যক্রমে কোনও ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হবে না। কিন্তু পরীক্ষার হলে প্রবেশের আগেই এই মূল্যায়ন নির্দেশনাগুলো কিছু প্রতিষ্ঠান প্রধান বিভিন্ন মহলের সঙ্গে শেয়ার করায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। শুধু তাই নয়, একটি শ্রেণি মূল্যায়নের অসত্য, ভুল, অপ্রাসঙ্গিক এবং বিভ্রান্তিকর সমাধান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।
এনসিটিবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মূল্যায়নের বিষয়টি নিয়ে এমনিতেই এক শ্রেণি জলঘোলা করছে। তারপর মূল্যায়ন নির্দেশনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিভ্রান্তিকর সমাধানও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের কোনও সমস্যা না হলেও অভিভাবক এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা দায়িত্বহীন অনৈতিক কাজ করেছেন।
এনসিটিবির জরুরি বার্তায় বলা হয়, ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ২০২৪ সালের ষান্মাসিক সাময়িক মূল্যায়ন গত ৩ জুলাই থেকে দেশব্যাপী একসঙ্গে শুরু হয়েছে। ষান্মাসিক সামষ্টিক এই মূল্যায়নের ‘মূল্যায়ন নির্দেশনা’ প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়নের আগের দিনে নৈপুণ্য অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিজস্ব আইডিতে পাঠানো হচ্ছে।
জরুরি বার্তায় বলা হয়, ‘যদিও এই মূল্যায়ন নির্দেশনাগুলোয় কোনও শিক্ষার্থী আগে থেকে জেনে গেলেও সামগ্রিক মূল্যায়ন কার্যক্রমে কোনও ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হবে না, তারপরও পরীক্ষার হলে প্রবেশের আগেই এই মূল্যায়ন নির্দেশনাগুলো কতিপয় প্রতিষ্ঠান প্রধান বিভিন্ন মহলের সঙ্গে শেয়ার করায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। যার ফলে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি এবং সংস্থা এই মূল্যায়ন নির্দেশনাগুলোর বিভিন্ন অসত্য, ভুল, অপ্রাসঙ্গিক এবং বিভ্রান্তিকর সমাধান ইউটিউব এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এই বিভ্রান্তিকর সমাধানগুলো শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের ব্যাপকভাবে বিভ্রান্ত করছে। আর মূল্যায়ন কার্যক্রম বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। প্রতিষ্ঠান প্রধান বা প্রধান শিক্ষকের নিজস্ব আইডিতে পাঠানো এই মূল্যায়ন নির্দেশনাগুলো বাইরের যে কারও সঙ্গে শেয়ার করা শিক্ষকতার নৈতিকতাবিরোধী কার্যক্রম এবং চরম অশিক্ষকসুলভ আচরণ।
নৈপুণ্য অ্যাপের ইউজার আইডির মাধ্যমে এই মূল্যায়ন নির্দেশনাগুলো ডাউনলোড এবং বিস্তরণ কার্যক্রম ট্র্যাকিং করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আছে। এই ট্র্যাকিংয়ের আলোকে কোনও প্রতিষ্ঠান প্রধান মূল্যায়ন নির্দেশনাগুলো কোনও অপ্রাসঙ্গিক কমিউনিটি কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ারের বিষয় প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমতাবস্থায় মূল্যায়ন কার্যক্রমের মুল্যায়ন নির্দেশনাগুলো বিস্তরণের মতো স্পর্শকাতর একটি বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার এবং সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য অনুরোধ করা হলো।