X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

আইসিইউ’তে কিংবদন্তি আবদুল জব্বার

বিনোদন রিপোর্ট
০২ আগস্ট ২০১৭, ১৩:৪৩আপডেট : ০২ আগস্ট ২০১৭, ১৬:৩৬

কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী আবদুল জব্বার গেল প্রায় তিন মাস ধরে অসুস্থ। তিনি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন। মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে তার শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটে, স্থানান্তর করা হয় আইসিইউ’তে।

আবদুল জব্বার বুধবার (২ আগস্ট) সকালে আবদুল জব্বারের ছোট ছেলে বাবু জব্বার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‌‘হঠাৎ করেই বাবার শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি হয়েছে। তাকে জরুরি ভিত্তিতে আইসিইউতে আনা হয়েছে গত রাতেই।’
বাবু আরও বলেন, ‘সমস্যা হচ্ছে তিনি এখন কাউকে ঠিক মতো চিনতে পারছেন না। ডাক্তার বলেছেন উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সেই সামর্থ্য আমাদের এখন নেই। এখন আমরা কী করবো, সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না।’
এই কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পীর দুটি কিডনিই বর্তমানে নষ্ট। উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত আবদুল জব্বারকে দেশের বাইরে নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন তার চিকিৎসক ও পরিবারের সদস্যরা। এ ক্ষেত্রে সরকার কিংবা কোনও প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয় বলেও তারা মনে করছেন।
প্রসঙ্গত, আব্দুল জব্বার বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র হতে প্রচারিত ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’সহ এরকম বহু উদ্বুদ্ধকরণ গানের গায়ক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।
তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়’, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ ও ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গান তিনটি ২০০৬ সালে মার্চ মাসজুড়ে বিবিসি বাংলার শ্রোতাদের বিচারে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানের তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হয়। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত তিনটি সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার- বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক (১৯৭৩), একুশে পদক (১৯৮০) ও স্বাধীনতা পুরস্কারে (১৯৯৬) ভূষিত হন।
হাসপাতালের বিছানায় সাম্প্রতিক আবদুল জব্বার আব্দুল জব্বার ১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমান বাংলাদেশ) কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৮ সাল থেকে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে গান গাওয়া শুরু করেন। তিনি ১৯৬২ সালে প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য গান করেন। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি বিটিভির নিয়মিত গায়ক হয়ে ওঠেন। ১৯৬৪ সালে জহির রায়হান পরিচালিত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র ‘সংগম’-এর গানে কণ্ঠ দেন। ১৯৬৮ সালে ‘এতটুকু আশা’ ছবিতে সত্য সাহার সুরে তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৯৬৮ সালে ‘পিচ ঢালা পথ’ ছবিতে রবীন ঘোষের সুরে ‘পিচ ঢালা এই পথটারে ভালবেসেছি’ এবং ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’ ছবিতে রাজা হোসেন খানের সুরে ‘সুচরিতা যেওনাকো আর কিছুক্ষণ থাকো’ গানে কণ্ঠ দেন। তার আরেকটি কালজয়ী গান ১৯৭৮ সালের ‘সারেং বৌ’ ছবির আলম খানের সুরে ‘ও..রে নীল দরিয়া’।
২০১৭ সালে মুক্তি পায় দেশবরেণ্য এই কণ্ঠশিল্পীর প্রথম মৌলিক গানের অ্যালবাম ‘কোথায় আমার নীল দরিয়া’। অ্যালবামটির গীতিকার মোঃ আমিরুল ইসলাম, সুরকার গোলাম সারোয়ার।
আব্দুল জব্বারের প্রথম স্ত্রী শাহীন জব্বার এবং দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়া জব্বার মিতা। মিতার সঙ্গে জব্বারের পরিচয় হয় একটি মাজারে এবং সেই পরিচয়ের সুবাদের তাদের সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায়। মিতা ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর পারিবারিক ঝগড়ার জের ধরে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। দগ্ধ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চারদিন পর ৩০ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

আবদুল জব্বারের গান:


তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া
/এমএম/

সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
পুষ্পা: আসবে তৃতীয় কিস্তি!
পুষ্পা: আসবে তৃতীয় কিস্তি!
সমুদ্র সৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
সমুদ্র সৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
যুক্তরাষ্ট্রে নোমান রবিনের ‘ছাই থেকে ফুল’
যুক্তরাষ্ট্রে নোমান রবিনের ‘ছাই থেকে ফুল’
২৪ বছর পরে আবার একসঙ্গে...
২৪ বছর পরে আবার একসঙ্গে...
সুবিধাবঞ্চিত ৪ শতাধিক বাচ্চার সঙ্গে ‘মেঘনা কন্যা’র ইফতার
সুবিধাবঞ্চিত ৪ শতাধিক বাচ্চার সঙ্গে ‘মেঘনা কন্যা’র ইফতার