সমালোচনা হোক গান নিয়ে, বললেন তাহসান

এভাবে কেউ সচরাচর বলে না, যেমনটা বললেন তাহসান খান। তাও আবার সাংবাদিক ডেকে, আনুষ্ঠানিকভাবে!
নিজের অতীত অভিজ্ঞতা আর বর্তমান বাস্তবতা তুলে ধরে তাহসান আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘আমি খুব সৌভাগ্যবান। কারণ আমরা যে সময়ে গান শুরু করি, তখন পত্রিকার পাতায় নিয়মিত গানের বিশ্লেষণ হতো। কিন্তু এখন আর সেগুলো চোখে পড়ে না। এখন পত্রিকার খবরগুলো হয় মিউজিক ভিডিওকে কেন্দ্র করে।’
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর এক রেস্তোরাঁয় উন্মুক্ত হয় তাহসান-মালার গানচিত্র ‘আনমনে’। সিলভার স্ক্রিন-এর ব্যানারে প্রকাশিত এই গানটি গাওয়ার পাশাপাশি কথা ও সুর করেছেন মালা নিজেই। সংগীত পরিচালনা করেছেন সাকের রেজা। তানিম রহমান অংশুর পরিচালনায় তৈরি হয়েছে একটি ভিডিও। যাতে মডেল হিসেবে আছেন সাইফ সাইফুল ও রাজকুমারী রিয়া।
মূলত এই গানচিত্রের প্রকাশনা উৎসবে অংশ নিয়েই তাহসান খান কথা বলেন সংবাদ মাধ্যমের কাছে তার প্রত্যাশা নিয়ে।
তিনি বলেন, ‘একটা সময় ছিলো যখন অ্যালবাম নিয়ে সমালোচনা হতো পত্রিকায়। বলা হতো এভাবে- এই অ্যালবামটির অমুক চারটি গানের কথায় গভীরতা আছে। এই তিনটা গানের কথা শক্ত না হলেও সুর হৃদয় ছুঁয়ে যায়। এই গানটার শেষে শিল্পী যে টানটা দিয়েছে, সেটা কী দারুণ! এভাবে প্রায় প্রতিটা গান ধরে ধরে পত্রিকায় রিভিউ হতো। এরকম লেখা আমরা প্রতিনিয়তই পড়তাম। যেটা পড়ে আমরা উৎসাহ পেতাম, শিখতাম। এমনকি ভালো-মন্দ প্রতিক্রিয়াও জানাতাম। কিন্তু এখন আর এ রকম লেখা আমরা পাইনা।’
এর কারণটা তুলে ধরেন তাহসান। সাংবাদিকদের পাশাপাশি দোষারোপ করেন নিজেদেরকেও। বলেন, ‘এর কারণ হচ্ছে গানকে আমরা এখন সেলিব্রেট কম করি। এরকম অনুষ্ঠানও আর হয় না। আমরা গানের প্রচারটাও ঠিকমতো করি না। আমরা এখন ভিডিওর দিকেই বেশি মনযোগী।’
অনুষ্ঠানে আসা সাংবাদিকদের কাছে এই গানটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা প্রত্যাশা করেন তাহসান খান। সঙ্গে এটুকুও যোগ করতে ভোলেননি সচেতন তাহসান, ‘সাংবাদিক ভাইদের উদ্দেশ্যে অত্যন্ত কষ্টের সঙ্গে একটি কথা বলতে চাই। সেটা হলো গত এক বছরে আমাকে নিয়ে অন্য যতো নিউজ করেছেন, তার খুব কমই হয়েছে আমার গান নিয়ে। এটি আমার জন্য এবং পুরো ইন্ডাস্ট্রির জন্য কষ্টের। আমি আগের মতো গান নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ আশা করছি আপনাদের কাছে।’
এদিকে এদিন প্রকাশিত ‘আনমনে’ গানটি প্রসঙ্গে নিজের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তাহসান বলেন, ‘আপনারা যদি একটু পাশ্চাত্যের মিউজিক ভিডিও দেখেন, দেখতে পাবেন কোনও স্টোরি থাকে না। শুধু ফিল থাকে, কালারস থাকে, ইমোশন থাকে। আমার মনে হয় আমাদের এই গানটি ঠিক সেরকম কিছুই হয়েছে। তার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমরা যারা ইন্ডাস্ট্রিতে আছি তারা সবাই নিজেদের স্থান থেকে নিজেদের সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমার কাজ গান করা। আমি সেটার সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করবো। আর সাংবাদিক ভাইদের কাজ সেই গান নিয়ে লেখা। আমি আশা করবো আপনারা আপনাদের সেরাটা দিয়েই সেই দায়িত্বটা পালন করবেন। তাহলেই ইন্ডাস্ট্রি এগিয়ে যাবে। আমাদের এই গানটি কেমন লাগলো সেটা সত্যি করে পত্রিকার পাতায় বলবেন। যদি খারাপ হয় তাহলে অবশ্যই লিখবেন- খারাপ হয়েছে। এই ডিসকাশনটা নিয়মিত চাই।’
আনমনে: