আজ (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢালিউডের ক্ষণজন্মা নক্ষত্র সালমান শাহ’র ৪৯তম জন্মদিন।
১৯৭১ সালের এই দিনে সিলেটের জকিগঞ্জে তার জন্ম। যদিও তার বেড়ে ওঠা সিলেট শহরের দাঁড়িয়া পাড়ায়। যেটি এখন ‘সালমান শাহ ভবন’ হিসেবে অধিক পরিচিত।
বাংলা চলচ্চিত্রের বরপুত্র সালমান শাহকে হারানোর দুই যুগ চলছে। বলা হয়ে থাকে তারকার মৃত্যুর পর ধীরে ধীরে ভক্তরা ভুলতে শুরু করেন। তবে সালমান শাহ’র ক্ষেত্রে তা একেবারে বিপরীত! তার জনপ্রিয়তা এখনও আকাশমুখী। ভক্ত-সমালোচকরা তার স্মৃতিগুলো এখনও লালন করেন পরম মমতায়।
তাই তো দেশ ও বিদেশ থেকে আজও প্রিয় নায়কের স্পর্শ খুঁজে পেতে অসংখ্য ভক্ত ছুটে আসেন দাঁড়িয়া পাড়ার এই বিশেষ ভবনে। বিশেষ করে নায়কের জন্ম ও মৃত্যুদিন ঘনালে ভক্তদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে ভবন প্রাঙ্গণ। বাড়িটি হয়ে উঠেছে সালমান শাহ ভক্তদের জন্য তীর্থ স্থান।
এক ধরনের অলিখিত সংগ্রহশালায় পরিণত হয়েছে এই বাড়ি। নায়কের প্রাপ্তির সব স্মারক আর পুরস্কারে পূর্ণ এ বাসার শোকেস। দেয়ালজুড়ে সেঁটে রাখা হয়েছে বিভিন্ন সময়ের সালমান শাহ’র ছবি। ড্রেসিং টেবিল, ব্যবহৃত বইও আছে। বাড়িটিতে সালমান শাহ’র ব্যবহৃত খাট-চেয়ার ও কিছু তৈজসপত্রের দেখাও মেলে।
দাঁড়িয়া পাড়া এলাকার ব্যবসায়ী শরিফ রাসেল জানান, প্রতিদিন সালমান শাহ ভক্তরা বাড়িটি দেখতে আসেন। আর শুক্রবার হলে আরও বেশি লোকসমাগম ঘটে। এমনকি ওই বাসায় এখনও নাটক-সিনেমার শুটিংও হয়। এছাড়া, মাজারেও ভক্তদের জিয়ারত করার পাশাপাশি প্রিয় নায়কের কবরের সামনে সেলফি তুলতে দেখা যায় নিয়মিত।
সালমান শাহ’র গ্রামের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জ থেকে আসা বদরুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, যখনই সময় মেলে তখনই সালমান শাহ’র কবর জিয়ারত করতে আসেন। ঘুরে যান সালমান শাহ ভবন। প্রাণভরে দোয়া করেন প্রিয় নায়কের জন্য।
ঢাকা থেকে আসা সালমান শাহ ভক্ত মন্নান মিয়া বলেন, ‘সালমান শাহ মৃত্যুবরণ করলেও এখনও তিনি বেঁচে আছেন আমাদের মাঝে। তার ছবি এখনও মানুষ দেখে। এসব ছবি আর কোনোদিন কেউ সৃষ্টি করতে পারবেন না।’
তিনি জানান, সালমান শাহ পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার পর তিনি আর বাংলা সিনেমা দেখেন না। তবে সময় পেলে সালমানের পুরনো ছবিগুলো ঠিকই দেখেন।
সালমান শাহ’র মামা আলমগীর কুমকুম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভক্তরা দেশের বিভিন্নস্থান থেকে এখনও আসেন। আমি তাদের আবেগকে শ্রদ্ধা জানাই। তারা যে এখনও সালমানকে মনে রেখেছে, এটা ভাবলেও গর্ব হয়।’
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৫ বছর বয়সে কোনও এক অজানা অভিমান নিয়ে আত্মঘাতী হন সালমান শাহ। যে মৃত্যু আজও রহস্য হয়ে আছে বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে।