X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১
সর্বশেষ প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট

হিলারিকে ‘নোংরা নারী’ বললেন ট্রাম্প

বিদেশ ডেস্ক
২০ অক্টোবর ২০১৬, ০৯:০০আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০১৬, ১৪:১১

হিলারি ক্লিনটন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তৃতীয় ও সর্বশেষ প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কেও পরস্পরকে পাল্টাপাল্টি আক্রমণ করেছেন হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিতর্কে হিলারি বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কারণ ট্রাম্প তার একজন পুতুল মাত্র। বিপরীতে হিলারি ক্লিনটনকে  একজন ‘নোংরা নারী’ বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
পূর্ব নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী, বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায়) নেভেদা অঙ্গরাজ্যের লাস ভেগাসের নেভেদা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিতর্ক শুরু হয়। ৯০ মিনিটের বিতর্কে সঞ্চালকের ভূমিকায় আছেন ফক্স নিউজ চ্যানেলের ক্রিস ওয়ালেস। দুই প্রার্থী নিজেদের নীতিগত অবস্থান থেকেই সম্ভাব্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের নীতিগত অবস্থান নিজ দেশের সামনে তুলে ধরছেন।

বিতর্কে নারী ও এলজিবিটি সম্প্রদায়ের অধিকারের পক্ষে নিজের অবস্থানের কথা জানান হিলারি ক্লিনটন। নাগরিকদের অস্ত্র রাখার অধিকারের পক্ষে নিজের অঙ্গীকারের কথা জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া তিনি নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাতকে বৈধ করার যে রুলিং রয়েছে সেটি পরিবর্তনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিতর্কে নির্বাচনে পরাজিত হলে ফলাফল না মানার ইঙ্গিত দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনের ফলাফল যথাযথ হয় কিনা, তা খতিয়ে দেখেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা জানান তিনি। সরাসরি নির্বাচনের ফলাফল গ্রহণ বা বর্জনের কথা উল্লেখ না করে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এখন আপনাকে বলতে পারি, আমি আপনাদের উত্তেজনার মধ্যেই রাখছি।’

রিপাবিলকান পার্টির প্রার্থীর এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন বলেন, ট্রাম্পের এই অবস্থান জেনে তিনি ‘হতভম্ব’ হয়ে পড়েছেন।
হিলারি ক্লিনটন বলেন, ‘তিনি আমাদের গণতন্ত্রকে কলঙ্কিত করছেন, অবমাননা করছেন। আমাদের দুটি বৃহৎ পার্টির কোনও প্রতিদ্বন্দ্বীর এমন অবস্থান জেনে আমি হতভম্ব হয়ে গেছি।’
আগে থেকেই ট্রাম্প অভিযোগ করে আসছেন, ‘এবারের নির্বাচনে ১০ বছর আগে মারা যাওয়া ব্যক্তিও ভোট দেবেন।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘এখানে এমন সব মানুষ ভোট দিচ্ছেন, যারা এমনকি আমাদের দেশের নাগরিকও নন।’
রিপাবলিকান শিবির থেকেও ট্রাম্পের বক্তব্যের সমালোচনা আসার পর সোমবার (১৭ অক্টোবর) এক টুইটার বার্তায় ট্রাম্প বলেন, ‘নির্বাচনের দিন এবং তার আগে অবশ্যই বড় মাপের জালিয়াতি হচ্ছে। রিপাবলিকান নেতারা তা এড়িয়ে যাচ্ছেন কেন? নির্বুদ্ধিতা!’

আগের দুটি বিতর্কের পর জরিপ অনুযায়ী ট্রাম্পকে পেছনে ফেলে এগিয়ে ছিলেন হিলারি। তৃতীয় বিতর্কপূর্ব জরিপের ফলাফলেও ট্রাম্পের তুলনায় এগিয়ে আছেন হিলারি ক্লিনটন।

বিতর্ক শুরুর আগে মার্কিন নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিতর্কে দুই প্রার্থী সঞ্চালক ওয়ালেসের পক্ষ থেকে উত্থাপিত ঋণ ও অধিকার বিষয়ক ইস্যু (এনটাইটেলমেন্ট), অভিবাসন, অর্থনীতি, সুপ্রিম কোর্ট, বৈদেশিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছাড়াও একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নিজেদের শারীরিক সক্ষমতা- এ ছয়টি পরীক্ষামূলক বিষয়ের প্রশ্ন ও তার উত্তর দেবেন।

এর আগে ৯ অক্টোবর ২০১৬ রবিবার দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে মুখোমুখি হন হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিন পররাষ্ট্রনীতি উপস্থাপনের চেয়ে একে অপরকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেই কথা বেশি বলেছেন তারা।

বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ই-মেইল কেলেঙ্কারির জন্য হিলারির কারাগারে থাকা উচিত। নির্বাচনে বিজয়ী হলে তিনি হিলারির বিষয়ে তদন্ত চালাতে একজন স্পেশাল প্রসিকিউটর নিয়োগ দেবেন। ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের জবাবে হিলারি বলেন, ট্রাম্প যা বলেছেন সেটা একেবারেই মিথ্যা। এতে আমি বিস্মিত হইনি। এটা বরং খুবই ভালো হয়েছে যে, ট্রাম্পের মতো একজন বদমেজাজি লোক আমাদের দেশের সর্বময় কর্তা হতে পারেন না। হিলারির এমন বক্তব্যের মাঝপথেই ফের হিলারিকে জেলে পাঠানো উচিত বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।

বিতর্ক চলার সময় ট্রাম্পকে ২০০৫ সালে এক অডিও সাক্ষাৎকারে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়। আত্মপক্ষ সমর্থন করে ট্রাম্প উল্টো তীব্র আক্রমণ করেন হিলারি দম্পতিকে। নারীদের সঙ্গে নিজের যে কোনও ধরনের যৌন অসদাচরণের কথা অস্বীকার করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রিপাবলিকান দলীয় এ প্রার্থী বলেন, ২০০৫ সালের অশালীন মন্তব্য নিয়ে তিনি গর্বিত নন। তবে রাজনীতির ইতিহাসে বিল ক্লিনটন সবচেয়ে বেশি নারী নির্যাতন চালিয়েছেন। যৌন নিপীড়নের ঘটনায় বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

দ্বিতীয় বিতর্কে শেষ পর্যন্ত কোন প্রার্থী জয়ী হয়েছে সে ব্যাপারে জরিপ পরিচালনা করে ইউগভ ও সিএনএন/ওআরসি। অনলাইনে ৮১২ জন রেজিস্টারকৃত ভোটারের(যারা হিলারি-ট্রাম্পের বিতর্ক দেখেছেন) সাক্ষাৎকার গ্রহণের মাধ্যমে ইউগভের জরিপটি চালানো হয়েছে। আর টেলিফোন ও সেলফোনে ৫৩৭ জন ভোটারের সাক্ষাৎকার নিয়ে আলাদা আরেকটি জরিপ চালায় সিএনএন/ওআরসি।

দ্বিতীয় বিতর্ক নিয়ে সর্বশেষ দুটি জনমত জরিপই বলছে, বিতর্ক শেষে কিছু কিছু ভোটার তাদের সিদ্ধান্ত পাল্টেছেন। দ্বিতীয় বিতর্কের আগে সিএনএন-এর এক জরিপে বলা হয়েছিল, ৫৮ শতাংশ ভোটার হিলারিকে সমর্থন দেবেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু বিতর্ক শেষে তা ৫৭ শতাংশতে নেমে এসেছে।  আর  ইউগভ জানিয়েছিল ৪৮ শতাংশ সমর্থনের কথা যা পরে ৪৭ শতাংশতে নেমে এসেছে। সূত্র: সিএনএন, বিবিসি।

/এমপি/বিএ/

সম্পর্কিত
ডব্লিউএইচও এর সম্মেলনে যোগদানের বিষয়ে যা বললো তাইওয়ান
রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারী আটক
সর্বশেষ খবর
ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি পেছালো
অর্থ আত্মসাতের মামলাড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি পেছালো
তিন ঘণ্টা পর স্বাভাবিক হলো রাজবাড়ীর ট্রেন চলাচল
তিন ঘণ্টা পর স্বাভাবিক হলো রাজবাড়ীর ট্রেন চলাচল
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
ডব্লিউএইচও এর সম্মেলনে যোগদানের বিষয়ে যা বললো তাইওয়ান
ডব্লিউএইচও এর সম্মেলনে যোগদানের বিষয়ে যা বললো তাইওয়ান
সর্বাধিক পঠিত
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দার আটক
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা
সিয়াম-পরীর গানের ভিউ ১০০ মিলিয়ন!
সিয়াম-পরীর গানের ভিউ ১০০ মিলিয়ন!